ভুষিমাল
Sunday, March 28, 2010
যদি ভাব তোমার কথাই বলছি আমি
আমাদের ই-স্কুলে নানা রকম ফুল পড়ে থাকত। ঢুকেই ছিল বকুল। আমি কখনও বকুল কুড়াইনি। রবীন্দ্রনাথ দায়ী কি না জানিনা, কুড়াইনি। কেস্টোচুড়ার কুড়ি ছাড়িয়ে প্যাঁচ খেলা সে ছিল বেহেস্তের একটা বিনোদন। রাধাচুড়াকে ফুল বলে ভাবিইনি, কিরকম মধু ছড়ানো মৌময়আলো জড়ানো সব। ছিঁড়ে মধু চুসতাম রঙ্গন, ফুলে মুখ দিলেই কেমন যানি সেই সময় ঝিনুকদির কথা মনে হত। ইস্কুল ডেরেসে ইক্কেরে রঙ্গন ফুল দেখতে সে, মাত্তর এক কেলাস উঁচুতে পড়ত, ক্যুইজ-টুইজের রাস্তায় রোজ ক্ষারাক্ষরি হত, নো নিটফল , প্রত্যেক কম্পিটিশনে তাকে বলে বলে হারাই, প্রেম করল বাংলার মাস্টর ঐ হাবলাটাকে। ছো: রঙ্গন ফুল কোনদিনই আমার পছন্দ নয়, বিষ। বিষ।
আজকাল ধানমন্ডি শেখের বাড়ি ছাড়িয়ে হাঁটি আর বকুল দেখি। ঝরে আছে। তুমি ঠিক কি ফুল ভাল বাস আমি জানি না। তবে নিশ্চয়ই তার রঙ সাদা। আমি বকুল দেখি কেবল নয়। গুনিও। দু-একজন রিক্সাওয়ালাই নোটিশ করে কেবল, করুক। যথারিতি কুড়াই না। আজ শেখের মেগা ইভেন্ট। ৩২ ঝকঝকে তকতকে। বাড়ির সামনে রাখা সব ফুলের সামনে সেলোটেপে চিপকানো নামের সিরিয়াল। বেশ কয়েকটা গোলাপবাগান আছে নির্ঘাত, গুনি নাই। গোলাপের কথা মনে হতেই পিপড়েদের কথা মনে পড়ল, আয় পিপড়ে ঝেঁপে, শোক দিস মেপে। যা ভেবেসিলাম, একটাও বকুল নাই, রিকশাও নাই যথাস্থানে। গাছ তলায় দাড়িয়ে ডাকলাম, আয় তো আমার বকুল ফুল, নো রিপ্লাই। মালিনী কেবল অন্ধ নয়, কানেও শোনে না মনে হল, অমিত খচলে খচুক, সত্যি কথাই বলা ভাল।
পুজোর আগে টো টো করে ঘোরায় এখন ছেদ পড়েছে। টিলিভিশনের কাজ করিনা তো এখন। বৃষ্টিতে ছিন্নভিন্ন কাশফুলের চাইতেও তাই মিস করি দিঘি ভরা পদ্ম, বেশিরভাগই পদ্মিনীর মত গোলাপি। আর একরাশ ফড়িং ফড়িং ছেলেবেলা। বর্ধমান বা বীরভূম গেলেই ঠিক খুঁজে বার করতাম, সারা রাস্তা শুনতে শুনতে যেতাম, এখন আর পাওয়াই যায় না! যখন আকাশের তলায় ওমন একটা দিঘি পেতাম, তখন মনে হত আমি ইচ্ছা করলেই পরীক্ষায় ফার্স্ট হতে পারতাম, না আমি কোনো দিন হইনি, চাইওনি। পদ্মদিঘির পাড়ে, কখনও বা ইষৎ হাড়িয়ায় ভাসতে ভাসতে মনে-প্রাণে চাইতাম একটা জলপরীকে, মনে হত একদিন কোন এক পদ্মফুলের ভেতর থেকেই উঠে আসবে সে।
Sunday, February 08, 2009
আসলে সে সব ছিল নিতান্তই বিনোদিনী বালিকা বিদ্যালয়
এমনি এমনি বাড়ি গেলাম। বিকেলে প্রতনুকে খুঁজতে এক রথের মেলার জনস্রোতে। দুইপাশে মানুষ সরে সরে যাচ্ছে, ভীড় এগোয় না, বিহ্বলতা বাড়ে। চারপাশে দড়িতে প্ল্যাস্টিকের পুতুল, বেলুনে-পিস্তলে বিবিধ জুয়ার উপকরণ। আর সারা ভীড় জুড়ে আমার এক পরিচিত কিশোরী গন্ধ।
গন্ধটা ফিরে এল আবার। প্রতনু এই ঘরে পড়ায়, এখন কেবল রবি। একঝাঁক পিচ্চি।১১-১২ ক্লাস, তারপর কিছুতেই পড়াতে রাজি হয় না সে। অনার্স পড়ানো ভারী ঝক্কির! তবু তাদের সকলের সাথেই যোগাযোগ থাকে, ওই ঘরেই। সারা সপ্তাহ সে থাকে মুর্শিদাবাদে। ওখানকার একটা কলেজে সে পড়ায়। রবিবার চুঁচুড়ায়। ব্যাচের পর ব্যাচ, কিশোরী গন্ধ।
আমি নতুন কিছু লিখলে রবিবার যাই, শোনাতে সেই গন্ধে বসে পড়ি, পাতা উল্টাই, আর শীতল বোধ করি। পিচ্চিদের অনেককেই আমি চিনি, ছোট শহরে যা হয়। এখনো নাকি তারা সকলেই আমাকে চেনে। ওই ঘরে আটকানো আমার আঁকা এক বিশাল ক্যানভাসের সূত্রে।
মেলায় দাঁড়িয়ে আমি পুতুল খুঁজি, আর কাঠের কাজ, তালপাতার সেলাই। পাইনা। রঙিন ছিটকাপড় মেলানো আসন কিনি কেয়েকটা। আর চারপাশে সব যেন চেনা মুখ দেখি। পিচ্চি মেয়েগুলো মেলায় এসেছে তাদের পিচ্চি কোলে নিয়ে। এরা কিছুতেই গন্ধটা হারাতে চায়নি। আমার মজা লাগে।
বারদুয়েক গেছি স্কুলটায়, ঘুটেবাজার ছাড়িয়ে। অভিজিত বারুইদের বাড়ি ছিল ঠিক গায়ে গায়ে। গেছি। কুট্টিকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি কয়েকবার, সাইকেলের রড তা মনে রাখলেও রাখতে পারে। আসলে কাদার মত নীল রং আর সাদা ব্লাউজের কেমন জানি একটা গন্ধ আছে, নেলপালিশের মত। সারা রথতলা জুড়ে আছে গন্ধটা, কিশোরীদের দ্বিপ্রাহরিক হৈচৈ, আর বিনোদিনী বালিকা বিদ্যালয় ছুটি হয়ে যাওয়ার পর থেকে যেভাবে নীল হয়ে যায় রাস্তা ঘাট, আর কিছু প্রাইভেট টিউটরের ১৪ বাই ১২ তা ঠিক মত দেখা হয়ে উঠলনা কোন দিন, একটু আপসোস হয়।
আমি মাঝেমাঝে ছেলেবেলায় যাই। হাতদিয়ে ছুঁয়ে-টুঁয়ে দেখি সব ঠিকঠাক আছে কি না। আসলে সে রকম সময় এলে তুলোরা ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে, উড়ে উড়ে যায়। যেন একেকটা খালি নীল-সাদা ট্রেন উড়ে যাচ্ছে পাশ দিয়ে, দেল প্যালাইডুয়ার স্টেশনের মত। আকাশে দূর জেটপ্লেনের রেখা আমি আর এখন তাকিয়ে দেখিনা, সব নীল-সাদা একই গন্ধে সাদা-মাটা হয়ে পড়ে ছেলেবেলায় পৌঁছে গেলে।
Wednesday, July 04, 2007
এখন এগুলো ভাবার সময় নয়
Monday, July 03, 2006
গ-ল-প
যা চিরাচরিত, তাকে চিরে দেখা একসময় খুব হুজুক ছিল৷ এখন সেই হুজুক বা হিড়িক কোনটাই নেই বটে; কিন্তু সেই গল্পটা এখনও অক্ষত আছে ৷ কিন্তু সেই গল্পটা বলতে গিয়ে মুশকিল দেখা দিল, অন্তত আমার৷ চার-পাঁচবার ঢোক গিললাম ৷ ঘরের আলো দু'বার নেভালাম আর তিনবার জ্বাললাম ৷ মেঘের মত ফুরফুরে এয়ার কন্ডিশন আরও দু'ডিগ্রি নিচে ঠেলে দিলাম ৷ আমি শত ভেবেও মনে করতে পারলাম না গ, ল, প এর মধ্যে সবাই ছেলে ছিল কি না ৷ প যেহেতু 'ল' কে কাঁধে করে নদীটা পেরিয়েছিল, তাই দৃশ্যত 'প' কিঞ্চিত্ বলশালী, পুরুষ হওয়া স্বাভাবিক ৷ কিঞ্চিত্ উত্সুক বোধ করলাম, আচ্ছা 'ল' কী নারী? রাত্রে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ফাটাফাটি স্বপ্ন দেখলাম ৷ আমি ঐশ্বর্য রাইকে কাঁধে করে নদী পার করছি ৷ অত:পর আখ্যান আরম্ভ ৷
ঐশ্বর্যকে আমি কোথায় প্রথম দেখি ঠিক মনে নেই ৷ ওর জন্যে আমার মনে একটু দুর্বলতা ছিল ৷ খবরের কাগজে ওর ছবি বেরোলে আমার বুকের মধ্যে ঢিপিস ঢিপিস হত ফিল্মি কায়দায় ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ডের মতো ৷ অন্য ঘ্যাম কোন ছবি দেখলেও ঢিপি ঢিপিস হতো, কিন্তু পূর্বোক্ত ঢিপিস ঢিপিস ছিল একেবারে অন্যস্বাদের ৷ সে আমি তোমাদের বোঝাতে পারবো না ৷ কেবল আমার যে বেষ্টফ্রেন্ড ( ধরা যাক তার নাম 'গ' ) তাকে বলেছিলাম ৷ ব্যাটা একটা গাধা ৷ বলে কিনা ডাক্তার দেখা ৷
আমি জানতাম এর চিকিতসা একমাত্র ঐশ্বর্যই করতে পারে ৷ আমি ওকে নিয়মিত চিঠি লিখতাম যদিও ঐশ্বর্যের কাছ থেকে আমি কোন উত্তর পেতাম না ৷ গাধাটা বলত, এসব প্লেটোনিক প্রেম ছাড় ৷ ভাল স্যাটি মেয়ে দেখে প্রপোজ কর দেখি ৷ এমনও হয়েছে 'তাল' বলে একটা সিনেমা চলছিল তখন, পরপর চারটে শোতে ঐশ্বর্যের সঙ্গে কথা বলছি ৷ তারপরও হলে বসে আছি দেখে মালিকপক্ষের লোক ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে ৷ বাইরে হ্যাভক বৃষ্টি পড়ছিল, সারা রাত্তির প্যাচার মত ভিজলাম ৷ তখনই আমি ডিসিশন নিয়ে নিই, এবার নিজের রক্ত দিয়ে ঐশ্বর্যকে চিঠি লিখব ৷ রিপ্লাই না পেলে, এই শর্মা আর জীবনটাই রাখবে না ৷
আল্টিমেটলি অবশ্য চিঠিটা লেখা হয়েছিল গাধাটার বুদ্ধি দিয়ে, মুর্গীএর রক্তে ৷ আমার আলটিমেটাম জানিয়ে দিই ৷ সেই চিঠি ঐশ্বর্যকে পাঠিয়েছিলাম বিয়ারিং করে ৷ মাইরি বলছি সেই সময় আমার কাছে কোন পয়সা ছিল না ৷ আসলে পকেটে পয়সা থাকার কোন সিনই ছিল না ৷ হলে 'তাল' চলছিল ৷ পকেটে পয়সা থাকলে আমি হলের বাইরে থাকার মত বোকা নই ৷ আমি আমার বন্ধুটার মত গাধা নই ৷ ও তো যাকে পারতো তার সন্গে লাইন মারতো ৷ আমি ওর বেষ্টফ্রেন্ড হওয়ায়, ও অবশ্য আমাকে সব কথাই বলত ৷ ওর কোন ক্লাস-ফ্লাসের বালাই ছিল না, খালি ছুক-ছুক ৷ ঐ অনেকটা তোমাদের কার্ল মার্কসের মত ৷ আস্থা খালি 'মোড অফ প্রডাকশনে' ৷ চিঠিটা পাঠিয়েও আমার শান্তিতে থাকার জো ছিল না ৷ রাত্রে ঘুমাতে পারতাম না ৷ কেবল মনে হত, যদি ঐশ্বর্য টের পেয়ে যায়, ওটা মুর্গীর রক্তে লেখা ৷ আমার খুব ভয় করত ৷ রাতে ভাল করে ঘুমোতে পারতাম না ৷ আমার আবার ঘুম না হলে স্বপ্ন-ফপ্ন আসে না, মানে ধাতে নেই আর কী ! স্বপ্ন না দেখতে দেখতে আমি ক্রমশ ঐশ্বর্য এর কাছ থেকে দূরে সরে যেতে থাকলাম ৷
আমার স্বস্তিতে থাকার যো নেই ৷ আমার গাধা বন্ধুটার সাথে গন্গার ঘাটে যেতাম বটে, কিন্তু ওর সন্গে শান্তিতে দুটো কথা বলার যো ছিল না ৷ ও দিব্যি লাইন মেরে যেত আর আমি খানিকটা তফাতে বসে ঘাস ছিড়তাম আর পিঁপড়ের বাসা ভাঙতাম ৷ গন্গার দিকে আমি তাকাতাম না, ইনফ্যাক্ট আমার বেশ ভয় করত ৷ স্বপ্নে আমি এখান থেকেই ঐশ্বর্যকে কাঁধে করে নদী পার করেছিলাম ৷ ভাগ্যিস স্বপ্ন কখনও সত্যি হয় না ৷ নিজেই শালা সাঁতার জানি না, আবার অন্যকে পার করা ৷ প্রেস্টিজ পুরো ফেটে হাতে ৷ স্বপ্ন আর বাস্তবে অনেক ফারাক ৷ ঐশ্বর্য এই ঘাটে এসে দাঁড়ালে , মা কালীর দিব্যি, মিনিমান এককোটি লোক এসে গন্গার ঘাটে এসে জড়ো হয়ে যাবে ৷ স্বপ্নে তো গাধাটাকে ছাড়া আর কাউকে দেখিনি ! মনটাকে টেম্পোরারি বুঝ দিলাম, এই গ-ল আর প নিয়ে যত গল্পই থাক, রিয়ালিটিতে ডিফারেন্স আছে ৷ গাধাটার কাজই ছিল আমাকে উপদেশ দেওয়া, বলল, এই ডিফারেন্সটা বোঝার জন্যে নাকি আমার দেরিদা পড়া উচিত ৷
লাইব্রেরী থেকে বই গেঁড়িয়ে পড়া শুরু করে দিলাম ৷ ইংরাজী আমার ধাতে সয় না, কিন্তু এই বইটা দিব্যি লাগতে লাগলো ৷ লোকটাকে আমার বন্ধু মনে হলো ৷ ল্যাং খেলে এই ধরনের অনেক লেখা মাথায় আসে ৷ মাথা নেই, মুন্ডু নেই, লিখলেই হল ৷ নতুন থিওরি দিচ্ছি ৷ বই-এর পিছনে উত্তর মিলিয়ে কেউ খচাত করে কাটতে পারবে না ৷ দেখলাম, ফিলজফার হওয়াটাই বেশ ৷ ব্যাপারটা মাথার মধ্যে তিনদিন ধরে ঘুরপাক খেল ৷ আল্টিমেটলি শেপ নিল এক মাঝরাত্তিরে ৷ লোকনাথের ক্যালেন্ডারটার পেছনের জমিতে নামিয়ে ফেললাম ৷ গ-ল আর প কে নিয়ে আদতে কোন গল্পই হতে পারে না ৷ আগে অনেক ত্রিকোণ প্রেমের গল্প ফেঁদেছো, তখন এই শর্মা আসেনি বলে রক্ষা পেয়েছো ৷ আমি থাকলে পেঁদিয়ে বৃন্দাবন দেখিয়ে দিতাম ৷ বাইনারি থিয়োরি ঝেড়ে দেখলাম, মূল চরিত্র দুটো ৷ নিউট্রনটা বাড়তি, আসল হল পজিট্রন আর ইলেকট্রন ৷ সেটাকে এক্সপ্লেন করলাম ফ্রয়েড ঝেড়ে একই চরিত্রে নারী ও পুরুষের লক্ষণ কিভাবে থাকে ... ..৷
আমার থিসিসটা গাধাটাকে ডেকে শোনালাম ৷ 'গ-ল-প' -এর শেষটা শুনে ও হ্যাভক খচে গেল ৷ বললো, তোর পেট গরম হয়েছে, গন্গর হাওয়া খাবি চ ৷ আমি রাজি হলাম না ৷ 'মাইরি বলছি, সত্যি কথাটাই ওকে বললাম, গন্গা দেখলে আমার ভয় করে ৷ গাধাটা 'হাইড্রোফোবিয়া' ,না 'হাইড্রোসিল' কী সব বিড়বিড় করতে করতে হাওয়া হয়ে গেল ৷
এবার সুনীল গান্গুলিকে ষ্ট্রেটকাট একটা চিঠি লিখে ফেললাম, জানিয়ে দিলাম, বাংলা বর্ণমালায় 'গ-ল-প' তিনটে অক্ষর ফালতু রাখার কোন মানে হয় না ৷ 'প'টাকে হটিয়ে দেওয়ার জন্যে বাইশখানা গোলা গোলা জুক্তি দিয়েছিলাম ( আসলে 'ল' তে ল্যাংচা, লজেন্স, লরি সব হেভি হেবি জিনিস, 'প'তে পেঁদানি, পড়াশোনা সব খারাপ খারাপ ওয়ার্ড; এগুলো আমি অবশ্য ডিরেক্টলি ম্যানিফেষ্টোতে লিখিনি) ৷ একমাস ওয়েট করলাম, মালটার কাছ থেকে কোন রিপ্লায় এলো না ৷ মনে হল, ম্যানিফেষ্টো পড়ে সুনীল গান্গুলি ট্যান হয়ে গেছে ৷ আবার ভয়ও করতে লাগলো, পুরো কনসেপ্টটাই না আবার নেতাজী করে দেয় ৷ চুপিচুপি মুর্গীর রক্ত যোগাড় করে সুনীল গান্গুলিকে একটা হুমকি চিঠি লিখে ফেললাম ৷ বরকতদের মত এই শর্মাও শহীদ হবে বাংলা ভাষার জন্য ৷
তিনমাস কেটে গেল ৷ নো রিপ্লাই ৷ বুঝলাম ব্যাটা আমাকে ভয় পাচ্ছে ৷ চেপে যেতে চায় ৷ আমি আমার ক্ষমতা সম্পর্কে এবার নি:সন্দেহ হলাম, এন্থু ও বেড়ে গেল ৷ রবীন্দ্র সদন- নন্দন চত্তরে চর্কি শুরু করে দিলাম ৷ চারটে লিটল ম্যাগে আমার লেখা কবিতা বেরিয়ে গেল ৷ ( কবিতা না ছাই, আমার ম্যানিফেষ্টোর ছ'টা / আটটা করে লাইন ছাপিয়ে নিচ্ছি এই সুযোগে) ৷ বোল্ডার ঘোষ নামের এক মানবীর ফ্যানমেল এলো ঝাড়গ্রাম থেকে ৷ গুরু গুরু ৷
জনৈক সাহিত্যিকের স্মরণসভায় সবাই দেখলাম নিজের গল্প-কবিতা দিব্যি পড়ে চলে যাচ্ছে ৷ আমিও পকেট থেকে ভাঁজ করা ক্যালেন্ডারটা খুলে একসময় পড়তে শুরু করি ৷ কবিদের মতো গলায় ঢেউ খেলিয়ে খেলিয়ে দিব্যি পড়ছিলাম ৷ জনৈক পাঠিকা, সম্ভবত ঐ সাহিত্যিকের যুবতী স্ত্রী ( তিন নম্বর বা চার নম্বর নিশ্চয়ই) সদ্য বিধবা হঠাত চেঁচিয়ে উঠলেন , এই সব ' গাল-গল্প' বন্ধ করুন ৷ বুঝতে পারলাম আমার লেখা তার পুরোটাই ট্যান হয়ে গেছে ৷ মুচকি হেসে বললাম, ওসব পুরনো 'গল্প' ভুলে যান, দাদারা গল্পের শাঁস-আঁটি সবই খেয়ে ফেলেছেন, এখন শুধু 'গাল'টুকু পড়ে আছে ৷ ঝাড়ি মেরে দেখলাম, তার ফর্সা গালটা স্যাট করে লাল হয়ে গেল ৷ বুকের মধ্যে টের পাচ্ছি সেই ঢিপিস ঢিপিস, যেন ডাইনোসরে ডন দিচ্ছে ৷ 'প্রেম'এ পড়লাম নাকি? না: 'প' টাও ইম্পর্টেন্ট মনে হচ্ছে ৷ প্রেমে, প্লেনে আর প্লেগেও রক্ষা করো বাবা লোকনাথ, তোমার সার্ভিস আরেকটু এক্সটেন্ড করে দাও বাবা ৷
প্রথম প্রকাশ : ছায়াবৃত্ত, বর্ষ ১, সংখ্যা ৯, অক্টোবর ২০০৪
Tuesday, June 20, 2006
সিস্টেমান্তর
এলাকা জুড়ে ডাইনোসরদের মধ্যে মড়ক দেখা দিলো ৷ অল্প বয়সেই সবাই বুড়ো হয়ে যেতে লাগলো ৷ আর বুড়ো হতে না হতেই সমস্ত দাঁত পড়ে যেত ৷ তখন তারা খাবার খেতে পারতো না- বলা ভালো- খাদ্য সংস্থান করতে পারতো না ৷ ডাইনোসরেরা মহাসাগরের পার থেকে ঝিনুক কুড়িয়ে সেটার খোলটা প্রথমে দাঁত দিয়ে কড়মড় করে ভাঙতো তারপর ভেতরে যে ইয়া বড় বড় মুক্তো থাকতো সেগুলো সারাদিন ধরে চুষে চুষে খেত ৷ ফলে দাঁত পড়ে যাওয়ায় ঝিনুক ভেঙে মুক্তো খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল ৷
ডাইনোসরেরা দৌড়ালো ডেন্টিষ্টের কাছে ৷ ডেন্টিষ্ট ডাইনোদের শরীরের সঙ্গে মানানসই ইয়া লম্বা লম্বা দাঁত ফিট করতে গেল ৷ কিন্তু বিপদ এল যখন ডাইনোসরেরা বেঁকে বসল ৷ বললো, আমাদের ছোট্ট ছোট্ট দাঁত দাও ৷ বড় দাঁত আমাদের একঘেয়ে হয়ে গেছে ৷ পেছন থেকে অন্য ডাইনোসরেরা চীত্কার করে উঠলো , উল্টে দাও, পাল্টে দাও ৷ ডাক্তার বললো, তোমরা ছোট্ট ছোট্ট দাঁত নিয়ে কি করবে ? ঝিনুক তো ভাঙতে পারবে না ৷ তখন ডাইনোসরেরা বললো, তাহলে মানুষের মত দাঁত দাও ৷ ডাক্তার ভাবলো, মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী: ওদের দাঁত দিয়ে দিলে ডাইনোদের দাঁতের বুদ্ধি খুলে যাবে ৷ ফলে ঝিনুক ছেড়ে কোপ্তা কোর্মা খাবে ৷ তখন স্বাভাবিক খাদ্য শৃঙ্খলে টান পড়বে ৷ মুখে বললো, মানুষের দাঁত ? ঐ দাঁত পড়লে কিন্তু সারাদিন মানুষের মত বকবক করবে ৷ ডাইনোসরেরা সমস্বরে বললো না না ঐ দাঁত চাই না ৷ আমাদের নিজেদের দাঁত ফিরিয়ে দাও ৷ ডাক্তার পড়লো বিপদে ৷ তার কাছে ডাইনোসরের দাঁত ছিলো না ৷ সে বললো, দাঁত একবার গেলে আর ফিরে পাওয়া যায় না ৷ দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝতে হয় ৷
এদিকে বুড়ো ডাইনোসরদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে লাগলো ৷ সরকার ভয় পেয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে দশ দফা কর্মসূচী নিয়ে এলো ৷ কেন না , সরকার সেই বছরই ওল্ড সিটিজেনদের সুবিধা দানের জন্যে বিশ দফা কর্মসূচীর প্রস্তাব করেছিল ৷ সরকার এখন দেখল বয়স্ক নাগরিকদের সুবিধাদানের কর্মসূচী বাস্তবায়িত করা অসম্ভব ৷ ট্যাকশাল এমনিতেই শূণ্য ৷ ফলে দপ্তরে দপ্তরে সার্কুলার পাঠালো, জনসংখ্যা বাড়াও ৷ ছোটদের যোগান বাড়লে তবেই বুড়োদের চাহিদা প্রশমিত হবে ৷ নির্দেশ জারী হল ৷ আওয়াজ উঠলো- প্রতি ঘরে দশটি শিশু ৷ কেউ রবীন্দ্রনাথ কেউ যীশু ৷৷ ঘোষণা করা হল, প্রতি পাঁচ বছরে সর্বাধিক উত্পাদনকারী দম্পতি কে ধৃতরাষ্ট্র পুরস্কার দেওয়া হবে ৷ দশের বেশি সন্তান থাকলে মা-বাবাকে কেবিসি তে সরাসরি প্রতিদ্বন্দিতা করার সুযোগ দেওয়া হবে ৷
ছোট ডাইনোসরদের মধ্যে হইচই পড়ে গেল ৷ তাদেরকে সর্বত্র গুরুত্ব দেওয়া শুরু হল ৷ সরকার থেকে ভোটাধিকারের বয়স কমিয়ে দেওয়া হল ৷ ষ্টার টিভি জুনিয়ার কেবিসি চালু করে দিল ৷ বুড়োদের পরিবর্তে ছোটদের মীমাংসার রায়ই অঞ্চলের সবাই মেনে নিতে লাগলো ৷ ছোট ডাইনোসরেরা ঝিনুক ভেঙে দিত অর বুড়োরা মুক্তো চুষে চুষে খেত ৷ ফলে বুড়োরা ক্রমশ অলস ও অকর্মণ্য হয়ে পড়তে লাগলো ৷ তারা শুধু বসে বসে ছোটদের সমালোচনা করত ৷ ছোটরা রোজ নিন্দে শুনতে শুনতে একদিন বলে উঠল, ধ্যাত্তেরিকা ৷ তারা লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিল ৷ তাদের অন্য একটা ইস্যু ও ছিল ৷ তাদের মধ্যে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বিপদজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছিল ৷ মানবাধিকার কমিশন থেকে সরকারকে নোটিশ পাঠানো হল ৷
বুড়ো ডাইনোসররা পড়ল বিপদে, তারাও সরকারের কাছে দরবার শুরু করলো ৷ খাদ্য দপ্তরে গিয়ে বললো, রেশনে মুক্তো দেওয়া যেতেই পারে শুধু একটু অসুবিধা আছে ৷ পাইল করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ঝুটা মুক্তো যতদিন না আমরা তৈরী করতে পারছি ততদিন আপনাদের না খেয়ে থাকতে হবে ৷ ডাইনোসরেরা বললো, তা কি করে সম্ভব ! খাদ্য মন্ত্রক বললো, আমাদের কিছু করার নেই ৷ রেশন ব্যবস্থার আওতায় আনতে গেলে আগমার্ক থাকতেই হবে ৷ ভেজাল না থাকলে আগছাপ পড়বে না ৷ ডাইনোসরেরা বললো, তা বলে না খেয়ে থাকতে পারবো না ৷ আপনারা ভেজাল মেশান ৷ খাদ্যদপ্তর খুশিই হল, আপনারা এক্ষুনি তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরে খোঁজ নিন ভেজাল মুক্তো কোথায় তৈরী হচ্ছে ৷
ডাইনোসরেরা গেল তথ্য ও প্রযুক্তির দপ্তরে ৷ তথ্য প্রযুক্তি দপ্তর ইন্টারনেটে অনেক ঘেঁটে ঘুটে বলল, আমেরিকার গান্ধী মেমোরিয়াল ল্যাবে নকল মুক্তো তৈরী হচ্ছে বটে কিন্তু খাদ্য দপ্তরের যে পরিমাণে দরকার তাতে ঐ ল্যাবের দশ বছর লেগে যাবে ৷ এই রকম দশ খানা ল্যাবে যদি বানানো যায় তবে এক বছর লাগবে ৷ একশো খানা ল্যাবে বানাতে পারলে মাস খানেক আপনাদের না খেয়ে থাকলেই চলবে৷ তবে বিশ্বায়ন ছাড়া বিদেশী প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুক্তো বানানো অসম্ভব ৷ আপনারা শিল্পদপ্তরে চাপ দিন ৷
ডাইনোসরেরা সকলে মিলে শিল্পদপ্তরে গেল ৷ তারা শুনে চমকে উঠলো, খাদ্য দপ্তরের রাস্তায় পা দেবেন না ৷ সাগর থেকে মাগনা পাওয়া মুক্তো কিনে খেতে খেতে একদিন দেউলিয়া হয়ে যাবেন ৷ তার থেকে কিছু ভালো মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীকে ডেকে আনি ৷ তারা তাদের নব প্রযুক্তির নতুন মেশিন-পত্তর দিয়ে ঝিনুক গুড়িয়ে মুক্তো সাপ্লাই দেবে ৷ ফ্রেশ আর ভেজাল-টেজাল থাকবে না ৷ আর দশটা কোম্পানী এলে কম্পিটিশনে দামও কম থাকবে ৷ আপনারা বিদেশ মন্ত্রকে খোঁজ নিন ৷ কোন বিদেশী কোম্পানী বিনিয়োগ করতে চায় কিনা ?
বিদেশী কোম্পানীগুলো সমুদ্র পারে তাদের অফিস খোলার জন্যে মুখিয়ে ছিল ৷ কাগজে টিভিতে বিজ্ঞাপন দিতে লাগলো কী ভাবে তাদের প্রযুক্তি দিয়ে গুঁড়িয়ে দেবে ঝিনুক ! সরকার ঠিক করলো এবার বিশ্বায়ন করবে ৷ ডাইনোসরেদের কানে গেল সেই কথা ৷ তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলো ৷ বিদেশী কোম্পানী প্রথমে দাঁড়াবে, তারপর বসবে তারপর শুতে চাইবে ৷ আস্তে আস্তে নিজস্ব শিল্প সংস্থা সব লোব পাবে ৷ তখন মুক্তোর বদলে ম্যাকডোনাল্ড চুসতে হবে ৷ সে আরেক বিপদ ৷ তারা সরকারকে লিখিত ভাবে জানালো, বিশ্বায়ন করে সমস্যার নিরসন চাই না ৷ অন্য ভাবে খাদ্য সমস্যা মেটান ৷ সরকার বললো, তাহলে হরলিক্স বা কমপ্ল্যান খান ৷
হরলিক্স, কমপ্ল্যানের বিক্রি খুব বেড়ে গেল ৷ কিন্তু বুড়োরা কিছুদিনের মধ্যেই বিপদ টের পেতে লাগলো ৷ তাদের ছিল খুব সন্দেহ বাতিক ৷ তারা সব কিছুর মধ্যেই বিপদ টের পেত ৷ বুড়োরা কেউ চোঁ চোঁ করে লম্বা হতে লাগলো, কারও স্মৃতিশক্তি খুব বেড়ে যেতে লাগলো ৷ স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে জানানো হলো, তোমরা যখন বিশ্বায়ন করতে দিলে না তখন এরকম ছোট-খাট সমস্যা দেখা দেবেই ৷ ডাইনোসরেরা বললো, এই ভাবে চললে আমাদের গায়েও ডারউইনবাদের হাওয়া লেগে যাবে ৷ আমরা পাল্টে যেতে চাই না ৷ এ রকম চললে ক্রমে ক্রমে আমরা অন্য স্পিসিস হয়ে যাবো ৷ স্বাস্থ্য দপ্তর বললো, হু ৷ তাহলে কোক কোক খাও ৷ পেপসি খাও ৷
অবশেষে বিশ্বায়ন হল ৷ একে একে বিদেশী কোম্পানী আসতে শুরু করলো ৷ ডাইনোসরেরা ক্রমশ পাল্টে যেতে লাগলো ৷ এখন তারা সব কিছু মেনে নিতে শিখেছে ৷ ম্যাকডোনাল্ড, ডগ-বিস্কুট পেপসি খায় ৷ এখন প্রায় মানুষের মতই বুদ্ধিমান হয়ে উঠেছে ৷ দাঁত পড়লে ডেনটিষ্টের কাছে যায় বটে তবে এখন আর সমস্যা হয় না - মজার ব্যাপার মানুষের দাঁত তাদের দিব্যি ফিট করে যায় ৷ সব চেয়ে বড় কথা তাদের বুড়ো হওয়ার বয়স এখন অনেক বেড়ে গেছে, আসলে সিস্টেমটাই বদলে গেছে কিনা !
প্রথম প্রকাশ : অক্ষর, শারদীয়া সংখ্যা, ১৪০৮
ঈশ্বরের জুতো
ইশ্বরের হেভি জুতোর দরকার ৷ শালা, সারা স্বর্গ এখন নাচা-গানার পরদিনের সল্টলেক ৷ চতুর্দিকে বুভুক্ষু পেরেক ৷ আর শালা ফুটলেই নরকে ছোট, কোথায় বেলেঘাটা কোথায় আইডি ! মোদ্দা কথাটা হল গুরুর জুতো চাই ৷
ইশ্বর তো আমাদের সরকারী অফিসের বড়বাবু নয়, যেমন ভাবা তেমন কাজ; স্যাটাস্যাট হাবুর মাকে স্বপ্ন দিলেন ৷ মাঝরাতে হাবুর মা ঘুম ভেঙে উঠে হাউ হাউ করে কাঁদতে লাগল ৷
পাঁচড়া হাইস্কুলের হেডমাষ্টার বিভূতিবাবু সেজ মেয়েটার বিয়ের গতি করার জন্যে টিভিতে অনলাইনে অশেচনক কামিনীমাতাকে ধরেছেন, টেলিফোনে ৷ আপাতত রাহু-কেতু এক ৷ টাফ সিচুয়েশন ৷ শিবরাত্রির দিন সাদা শাড়ি পরে ভিজে গায় পাঁচটা মাটির জুতো ... ৷ বিভূতিবাবু অর কিছু শুনতে পেলেন না, ইশ্বরের মাথায় জুতো ! ছি: ছি: ছি:, টিভির ভলিউম এমনিতেই শূণ্য, সেজ মেয়ে মা'হারা পমপম এক্সাইটেড হয়ে শুনছিল এক সাইডের কথাবার্তা, সেও কিছু ঠাউর করে উঠতে পারল না৷
সারারাত হাবুর মা বিছানায় বসে হাউ হাউ করে কাঁদল, হাবু এমনিতে ব্যোমকে ছিল, রাত্তিরবেলা ইচ্ছে ছিল গোস্বামীদের নারকোলগাছ দুটো একটু হালকা করে দেবে, মায়ের ঘ্যানঘ্যানে কান্না শুনে সে তো ল্যাবড়ে গেল ৷ এ কি আব্দার রে ভাই, জুতো চাই !
মাল হাপিস করাই যখন হাবুর কাজ, ফোকাস একটু শিফট করলেই হল ৷ টাকা চাই না, ঘড়ি চাই না, ঘড়া চাই না, স্রেফ জুতো ৷ মায়ের মাথর দিব্যি খেয়ে সরাইঘাট এক্সপ্রেস রাজধানী এক্সপ্রেস, মোকামা ফার্ষ্ট প্যাসেঞ্জার সব জায়গা থেকে জুতো সরাতে লাগল ৷ আরেকটা মেইন সোর্স ছিল মন্দির, হেজি-পেঁজি সমস্ত মন্দিরের সামনে ওত পেতে থাকে হাবু, সুযোগ পেলেই জুতো উঠিয়ে ফুড়ুত ৷
হাবুর মায়ের জানাই ছিল না, হাবুর মধ্যে এরকম একটা প্রতিভা লুকিয়ে ছিল ৷ কেবল ইশ্বরই সেটা জানতেন, ঝোপ বুঝে কোপ মেরে দিয়েছেন ৷ হাবুর মা স্বপ্নে ইশ্বরকে দেখেছেন বটে কিন্তু পায়ের দিকে নজর দেন নি, কোন সাইজের জুতো ফিট হবে তাই নিয়ে হাবু-হাবুর মা দুজনেই কনফিউজড ৷ ইশ্বর ঠিকমতো চিনতেও পারেন নি হাবুর মা, পড়াশুনা নাই তো, তেত্রিশ কোটির মধ্যে কোন একটা হবে ৷ ছেলে না মেয়ে সেটাও ক্লিয়ার নয় ৷ হাবুর মা'র মতে ছেলে, হাবুর মতে মেয়ে; নইলে সে এত ইন্সপিরেশন পেত না ৷ এইসব কথা শুনলেই হাবুর মায়ের মটকা গরম হয়ে যায়৷ সমস্ত জুতোই খুব সাধারন, মামুলি৷ মানুষের পায়ে ঠিক, কিন্তু ঈশ্বরের জন্য বিলো ষ্ট্যান্ডার্ড!
দিন যায়, মাস যায়, হাবুদের বাড়িতে জুতোর পাহাড় জমে ওঠে৷ হাবুর মা সেগুলো সার্ফ দিয়ে কেচে, পালিশ-ফালিশ করে চাঁদনি চকের চোরাবাজারে বেচে দিয়ে আসে ৷ হাবু যথারীতি দূরপাল্লার ট্রেনে আর মন্দির-মসজিদে জুতো সরিয়ে এক্সপার্ট হয়ে উঠেছে ৷ এখন সে ঘুঘুমাল ৷ পালা-পার্বণে আগে থেকে ক্যালেন্ডারে দাগ দিয়ে রাখে, কোন মন্দিরে গরবাচৌথায় ভীড় আর কোন মসজিদে ঈদ-উল ফেতরে হেভি ক্তাউড তা একন হাবুর নখদর্পনে ৷এমন করে দিন কাটছিল ৷ ঈশ্বরও এর মধ্যে আসেননি হাবুর মায়ের কাছে মাল ডেলিভারী নিতে ৷ ঈশ্বরের মর্জি তো! বোঝা ভার ৷ এদিকে হাবুর নেশা-প্রেম সবই ... ৷ বিশেষত লেডিজ চপ্পল ৷ একেকটা চপ্পল শুঁকে সে নারী সম্পর্কে অনুসন্ধান করে, কল্পনা করে নেয় উর্মিলা কিম্বা রবিনা ট্যান্ডনের চেহারার ৷ বিছানায় রাত্রে শোয় সেই সব জুতো নিয়ে ৷ হাবুর মা ধরে নিয়েছেন ছেলের এই নেমকহারামীর জন্য ঈশ্বর আসছেন না ৷
শিবরাত্রির দিন গঙ্গার ঘাটে হাবুর চোখ চিক্ চিক্ করে ওঠে, দু'পাটি বেওয়ারিস জুতো ! দুধ সাদা রং ৷ লেডিজ চপ্পল ৷ হাই হিল ৷ হেভি ৷ ফাটাফাটি ৷ বীভত্স ৷ গুটি গুটি পায়ে হাবু এগোয় সেটা সটকানোর জন্যে ৷ এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে ৷ জল বরাবর চেয়ে চোখ আটকে যায় ৷ ওফ্ ! সারা শরীর ভিজে, সাদা শাড়িতে ঘাটে উঠে আসছে পমপম ৷ ওফ্ গুরু ! উর্মিলা মাতন্ডকর কেউ না ৷ রবিনার গুষ্টির পিন্ডি ! এ কি জিনিস গুরু ৷ ঘাটে বসে পমপম মাটির জুতো বানাচ্ছে ঈশ্বরের জন্যে ৷ হাবু চেয়ে থাকে অপলক ৷ এই প্রথম জুতো সরাতে গিয়ে তার হাত কাঁপছে ৷ একবার জুতোর দিকে তাকায় একবার পমপমের দিকে ৷ লাব ডুব, লাব ডুব ৷ মাটি কাঁপছে ৷ সব ঝাপসা ৷
জুতো বানানো শেষ করে ধীর লয়ে সিঁড়িতে এসে পড়ে থাকা জুতোর দিকে একবার তাকিয়ে সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠতে থাকে ৷ মন্ত্রমুগ্ধের মত হাবু জুতো দুটো উঠিয়ে যেতে থাকে পমপমের পিছন পিছনে ৷ তার কানে তখনও বাজছে ঈশ্বরীর কন্ঠস্বর: ' জুতোটা একটু দেখবেন ৷ প্লীজ ৷'
প্রথম প্রকাশ: ছায়াবৃত্ত, মার্চ, ২০০৪
Sunday, June 18, 2006
রাtreeর অধিকার ও জিলিপি এষণা
...আমার হাতে এখন কোন আর রাত অবশিষ্ট নেই, কুয়াশায় কেড়ে নেয়, যৌবন বিধুর স্মৃতি, নাট বল্টুর স্বপ্নে প্রবেশ দ্বিতীয় হুগলী সেতুর,একপারে রাত একপারে দিন, আমি হাঁটি রাতদিন, এই ভাবে হয়ে যায় সাতটি কুমিরছানা... আমি দেখেছি ঠিক পৌনে দুই ঘন্টা সময় লাগে অতিষন²মণে, যদি পায়ে হাঁটি আর রাত থেকে দিনে যেতে চাই...
... সব কথা এক ঠেকে, টেলিফোনে, অসতর্ক, কবচ কুন্ডল দুটি চেয়ে নিয়ে গেল যারা,ট্রুটিফ্রুটি যেন,ফুটপাতে বাসি রুটি প্রজাপতি পাঁপড় পসরায় যায় চলে,আমার নখগুলি এঁকে-বেঁকে রেলের লাইনের মত, কেবল মুম্বাইগামী,ঝপকরে নেমে পড় অন্ধকার চারপাশে, সিনেমাহলের ভেতর বরফের উপদ্রবে , মাথার ভেতর বাসা বোলতার চাক,bee keeper মার্সেলো Mastroini বেরিয়ে আসছেন সেই রেল পথ ধরে,আমি ভাঁজ খেতে থাকি জিলিপির মত...
.. আয় সজারু সকল, মাথা চিরে আয়,আমি দিন থেকে রাতে যাই, যেন গুন্ডিচা দুইজন,পাপ তবে কি ছিল, কেউ কথা রাখে না তো,অ-য়ে অজগর , ইঁদুরছানা বারে বারে ফিরে আসে, non-phonetic writing দিয়ে ঘোড়া বানা দেখি, ফ্রিজের জিলিপিগুলি এই পেল চাকা, আমার সৈন্যদল যাও ঢুকে ঘোড়ার ভিতরে, হাঁটু মুড়ে বসি এস, করতলে রাখি বাস্প শকট চলে...
... ঝাউপাতা এই,যাক বালি উড়ে, ফ্রেজারgaunjরে রঙিন নৌকাগুলি ডাক দেয় অতলে,ভাসো, তাতে ভাসো,শতযুদ্ধের পরও নাকছবিটি থাকুন অম্লান, আমরা দিন আর রাতে ভাগ হয়ে গেলেও...
পূর্ব প্রকাশিতের পর- গ্রন্থে সংকলিত
তাই নাকি ? তাই হোক
মাঝে মাঝে তব হাততালি পাই৷ অনন্ত বিরাম মাঝে তব অশ্রুধারা গড়ায়ে পড়ুক এ ধরার মাঝে, ভরা সাঁঝে, নাহি খেদ তাহে৷ অনন্ত পুর্ণিমার চাঁদ কেবল জেলুসিল বলিয়া ভ্রম হয়, অনন্ত কুয়ার জলে, অম্বলে রোষানলে এক চাঁদ পড়ে আছে৷ তাই যদি তাই হয় তাই তবে কী? লাকি হোটেলের ঘিলু ফ্রাই খাইয়া কাদাচ মিঠুন চষন²বর্তী হইবার অভিলাসে ডেকান হইতে হাঁটিতে হাঁটিতে মন্ডাই চলিয়া যাও, তার বেলা? ইরানী রোস্তারার বিস্কিট গ্যাঁড়াইয়া ভোর বেলা তোমার চাঁদটি যখন মিশিয়া যাইতে থাকে, রাতের সব তারাই থাকে দিনের আলোর গভীরে, বাক্যে ক্রিয়া পদটির মত৷ আইস গরুর চোনার যায়াগায় আমরা আলতা মিশাইয়া দি, বড় বড় গামলায় দুধ জ্বাল দিচ্ছিলি , বেশ তো , এর পর নে উল রং করে৷ আমরা শৃগালকে স্বয়ং ঈশ্বর বলিয়া মানিব না, ইনক্লাব, তবু প্রতিটি গল্পে চাই সে ঝাঁপায়ে পড়ুক নীলবর্ণ অনন্ত কুয়োর জলে, যেন এক চাঁদ পড়ে আছে, ধরিবার তরে৷
আছে , থাকুক, প্রতিটি লোম, ছিঁড়িও না, যারে লোম দাও তারে দাও ছিড়িঁবার শকতি৷ গ্লাভসে গ্লাভসে লাগিতে লাগিতে চার হইয়া যায়, কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে৷ পেখম নাড়াইতেছেন বিপস, কেবিসি চক্রে, ঘিরিল অভিমুন্য যথা , ধরা যাক দু"একটা ইঁদুর এবার৷ মৃতপ্রায় নীলগাই, আঁকাবাঁকা ডালপালা , যেন বাসরুট, ছিঁড়ে যাওয়া গীটারের তার, চিরুনী থেকে খুলে নেওয়া চুলগুলি, থুতু সম্বলিত, তাদের ঘুরিয়া ঘুরিয়া নীচে পড়া, জয় বাবা মণি কাউল , তোমার পার্সপেক্টিভ রচনা, তোমার কত্থক নাচ ও চশমার কাঁচ, পারলে ছিঁড়ে নিও আমার হদৃয়, তবু আমরা কিম্বদন্তী স্বীকার করিব না, ইনক্লাব, তবু প্রতিটি ক্ষেত্রে চাই ক্ষেত্রগুলি থাকুক বর্গা চাষিদের দখলে, যেন বিল বই, চাঁদা আছে পুজার তহবিলে...
29৷01৷06৷
মলে দি বইখান
--------
চিষনবত্ ধুলিকণা, ও মহম্মদ কিব্রিয়া সাহেবের ক্যানভাসসমূহ ক্রমশ প্যান্ডেলে ও পেন্টুলুনে ছাপিয়া যাইতে থাকে৷ সুশীল মল্লিক গেয়ে ওঠেন, প্রতিভাত হয় নীলকন্ঠফুল, ত্রিভঙ্গমুরারী এক ময়ূরের জন্ম হয়, মনোরম, মনোরম কোন প্রচ্ছেদে আটকায় চোখ, হাতে নিতে ইচ্ছে হয় না, অন্য সময় যেমনটা হয়, চেনা লাগে প্রচ্ছদশিল্পীর নাম, এমনটা তো, নয়, চেনা অক্ষরবিণ্যাস এ প্রতিবার প্রথম দেখা সমুদ্রের মত তার ভেসে ওঠা নয়, মরচের মত প্রিয় হিরণদা, সোমনাথ ঘোষ বা কৃষ্ঞেন্দুর হাত-টান নেই, কম্পু তে দিশেহারা সৌন্দর্যের জন্ম হয়ে ঐশ্বর্যের বিজ্ঞাপনী ঝলকে টাইটেনিয়াম হোয়াইট৷কতক্ষণ সাদা থাকবে আমার চোখ, কেউ নেই কিছু নেই ধু ধু শূণ্যতা... শূণ্য এক সমুদ্র সৈকতে বসেছে বইমেলা, বিকিনি তরুনীরা বেওয়াচ মত্সগন্ধা হয়ে ভেলায় ভেলায় বেহুলা, মগ্ন সত্যবানে, মৃত পড়ে থাকা বইপষেন, ভেলাটি ডুবিয়া ডুবিয়া যায়, বেলাটি বহিয়া বহিয়া যায়...
খোঁপায় আমের মুকুল নিয়ে কলেজ তরুনীরা ছুটিয়া যায় সইটি লিখিবার তরে, সুনীল গাংগুলীর মত জামা পরে কোন এক জলহস্তী ভাসিয়া ওঠে শ্যাওলা ও কুচি কুচি কচুরীপানা বিন্দুগুলি সরাইয়া,নির্গন্ধা ইব কিংশুকা চিংড়ি শকুন ভক্ষণে অবিরত যেন পাতাল রেল প্রকল্প ক্রমশ বাড়ছে, অ্যামিবারও বিহ্বলতায় নিজেরে অপমান...
03৷02৷06৷
আতাকেলানের সহজপাঠ
-----------
দিন যায় দিন আসে, প্রশ্নবাণে অন্ধকার, বই ও মন তুই শুঁয়াপোকা হ সোনা, আমার সজনে গাছভর্তি এখন সব অলীক ফুলমালা, দূরে দেখি কবিবন্ধু স্যাট করে অমৃতের খালি বোতলে ভোডকা স্যাট করে লুকিয়ে ফেল্লেন, চিরবিট্রেবাণ গলার ভেতর, যেখানে কাঁপা কাঁপা ওঠানামা নেই, নো সঙ্কোচন লো প্রসাশন, কি জিনিস বানিয়েছিস গুরু, মৃতদের উদ্দেশ্যে দার্জিলিং পাহাড়ে ঝুলতে থাকা বস্ত্রখন্ডগুলি কিরণমালারা আঁচল লুটায়ে হাঁটে,সমস্ত ট্রাকিয়া বরাবর হেটে যায় পরীরা, শব্দপরী, সে কি ফিরবে না, সে কি ফিরবে না , ফিরবে না আর কোনদিন...
এর সাথে বই-এর কোন কথা নেই৷
এক গাধা ছিল৷ দুই কাঁধে ঝোলা বস্তা৷ ঝোলা ঝোলা কান৷ নো প্রশ্নবান৷ সে পাহাড়ে পাহাড়ে ঝোলায় করে বাইবেল নিয়ে যেত, প্রচারের উদ্দেশ্যে৷ তাই কষ্টিং কমানোর জন্যে গাধার পিঠ সম্বল৷একটু আধটু টার্গেট মিস হলে ক্ষতি কি? উদ্দেশ্যে যখন প্রচারের! এ গাধা এমনই গাধা গাদা বই নিয়ে বেরোত বটে একটু ঘাস-টাস খেয়ে সন্ধ্যায় ঠিক ঘরে৷ কাজেই ঘরের গাধা ঘরে তো বটেই ঘরের বাইবেল ঘরে৷গাধাদের দিয়ে কোন কাজ হয়? কেন হবে না৷ এবার বুদ্ধিকরে গাধার গায়ে লিখে দেওয়া হল অক্ষরমালা, জাষ্ট ফর এক্সপিরিমেন্টস সেক৷ গাধা ভাবল আজ, গুরু লোড কম, একটু দূরের ঘাস খাওয়া যেতে পারে৷ চালাও পানসি৷গাধার গায়ে যে অক্ষর মালা দেখে সেই ব্যোমকে যায়৷ ও হরি ! এ কি কেস? কেউ ব্রেইলের মত বুলায়৷ গাধার বুদ্ধি দেখে সকলে আর হে-সে বাঁচেনা, তার চাইতে আয় সব এটাকে অন্য আর্ট বলি৷ আরে কোথায় মিউজিয়াম, মমার্ত, বইমেলা?
05৷02৷2006
সুমেরু
কলকাতা বইমেলা
এ শুধু গানের দিন
কিছুটা রোdduউর পড়ে জানালার ফাঁকে, তারে দুই পাক খেয়ে গেল শাড়ি, ভাঁজ হওয়া নদী জল বিছানা চাদর হয়ে বেড়ে যায় রোddউর চৌকো চৌকো, মলাটবদ্ধ খাতাগুলি স্কুল-ক্লাস আঁকা, প্রজাপতি হওয়ার সখ গান থাক চিরতরে,এক এক সাজানো সব চোখ, থরে থরে, তোমার আলপিন দৃষ্টি চোখে চোখে বিঁধল সসাগরা হয়ে, আম্বেদকরের জন্মদিনে আমরা পালান করি নীরবতা, চুরমার করি আরও দু-একটা বাবরি মসজিদ এবার, শিশুটি যেন বেরিয়ে আসতে চায়, জল ভাঙ্গার শব্দ পাই চোখে-চোখে...
সৌভিক এর সাথে গ্রাফ এঁকে এঁকে বাংলা গান নিয়ে চলেছি, কিংশুক ও শিলাজিত্, কি ভাবে বিণ্যস্ত হতে পারে গান, আমি ই তখন রেডিও, আমরা কথা বলি, পেছন থেকে কিশোর, পাশ থেকে স্বদেশ, পাশ থেকে 106.2 নমুনা শোনায়, এর পর সেই লম্বা ষ্টেজে কতকিছুই বাকি থাকে, ভূমি সৌমিষেনর হল্লা-গুল্লা, আমি ও একটু নেচে নি Riতুর সথে, গান যেন নাগরদোলা, তার সার্কাস, তাবু, ফাল-ফাল র, ংশাড়ি গন্ধ জোত্স্না, ত তে লাগে ত, উরিব্বাস, এসে গেল বসন্ত উত্সব, এস জল কেলি, নলেন গুড়ের বাঙারির ভিতর,নেহারি নেহারি...
উজ্জয়িনী নগরী, সিদ্ধার্থ চলেছেন রথে, হাতে, শ্বেতপদ্মে পারিষদবৃন্দ বন্দনা গানে মত্ত,জানালার ভারি পর্দা সরিয়ে, সমবেত ঘুঙুরের শব্দ জড়িয়ে, যাচ্ছে রথের চাকায়, যেমনটা বোধ করি টের পাবেন কেবলমাষন কর্ণেরা, হু হু করে বইছে বাতাস, এবার অবগুন্ঠন খোল, থমকে থামার ইঙ্গিত, ফোঁস করে জ্বলে যাওয়া লাইটার, ম্যানড্রেক টুপি তুলে চুরুট ধরাবেন কোন গোয়েন্দা প্রবর, ঢিচ্যাও-ও-ও-ও, এক্ষনে শুরু হল তোমার মনপসন্দ সিনেমা মনপসন্দ গান, পীচের ড্রাম উল্টে নেচে উর্মিলা মাতন্ডকর...
ঢিচ্যাও, পর্দাবদল, ইয়ে নেশা হ্যায় ইয়ে যাদু হ্যায়, গানা ওয়ানা সব আপনি মর৷ই ইয়ে ৷ভন্দেগী এক জুয়া হ্যায়, ধুম পিচাক ধুম, ভেঙে দেওয়া সুবর্ণরেখা, বইয়ের ষ্টল, লাগ তড়াক তাই, আমরা দুটি ভাই, শিবের গাজন গাই, পরাণ মেলিয়া,চক্ষু খুলিয়া, যদি দুই আনি পাই, লোকাল ট্রেনভর্তি সব কন্ঠি কন্ঠি গান, ডেইলি, প্যাসোর, ওষ্ঠাগত প্রাণ, ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে, ছেলের দল বাড়ি আসে, আমি কিছু একটা ভুল-ভাল করেছি, গান, ঘেঁটুপুজা মরমে পসেছে তাহলে, মাগো, বরণডালা আনো...
পাঞ্চেত, সবুজ ড্যাম, অতিষ্ট যুধিষ্টির, ছায়া দ্যাখে সাদা বক, মাছ, ছায়া, স্থির, ভেসে আসে অজানা, সুর, খন্ড, গান, রাষিন দ্বিপ্রহরে, জলে, জ্বলে, যৌনষন²ঈড়া স্নান, কুমু,কুমুদিনী,কুমুদ ফোঁটে জলে, পাহাড় ডিঙানো গান, পৃথিবী রসাতলে, ধরা, ধরি, গান নয়, গানের শরীর, চুম্বনে, বর্ণে, আলো, গানেরা বধির, গান, সে তো নয় গান, দিনাবসানের তুল্যমূল্য আলো, ভাষা, শব্দ ভুলে যাওয়া ভলো, ঢের ভালো, অপচয়,স্মৃতি সংকল্প ক্ষয়, অবরোধে গান গাও ,মিছিলে, মিছিলে, আছ বিটোপির গায়ে, নির্মলে, নিখিলে...
(আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)
যার যা, ভালো লাগে না
মানুষ বসে হাসবেন কেবল, জালেতে মুখ লাগিয়ে, এই ভাবে দেখলেই আমার ছাগলের সি ংঘষা কথা মনে
পরে,উপস্থিত বুদ্ধিবিহীন আমি তাকেই বাসের গতিবিধির কথা জিআসা করি, এস্হ তো এই ঘন্টা দেড়, শীতকাল, যদিও সে হরপ্পা সভ্যতার কথা,আমার বান্ধবীটি সারা রাস্তা তার অলঙ্কার ছড়াতে ছড়তে যায়, যেন রামচন্দ্র আলসেতে বসে দেখে চলেছেন আনাকারেনিনা,আরে আরে আমাদের জন্য মর্তে ধেয়ে আসছেন নদী, সুতরা ংগন্তব্যের সেষে একটা নদী থাকবেই, থাকবেই, আরে সে সব CTVN মার্কা প্রচার নয়, এই তুলির আঁচড়ে পানেসারজি এঁকে দিচ্ছেন নদী...
... অমাবস্যার রাতে ঘুরঘুট্টি অন্ধকারে পীচের রাস্তাকেও নদী প্রমাণ করতে পারেন নীলস বোর,সুতরা ংফেরার বাস যে এই সাড়ে চয়টায় পাওয়া যাবে না, জানা কথা, আরে বিধাতা তো সব জেনেই বসে আছেন কি না,আমরা একটা হোটেলে প্রবেশ করি, হ্যা ঁএখানেও কোন প্রাপ্ত বয়স্ক চিষনমালা নেই,আপনারা উঠে
পড়ুন ...
... এব ংআমরা ফিরে আসি,কলকাতায়,এই ভাবে সেই ভাবে, 50 কিমি অটোতে ও খুলে যাওয়া শারীরিক যন্ত্রপাতি কুড়াতে কুড়াতে, যাক সে সব গুরুত্ত্বপূর্ণ নয়,আসলে আমার কিছু-কিছু জিনিস ভালো লাগে না, তা শতবার বলেও,লিখেও আপনি বোঝাতে পারবেন না, তখন বেরিয়ে পড়ুন, টাইটানিক চিরকালই ডুবে যায়, ভরসা রাখুন৷৷৷
ও শ্রেয়াদি, এর চাইতে বেশী লেখা গেল না আজ, কিছুতেই না,বাইরে বেশ বিদ্যুত্ চমকাচ্ছে, অন্ধকার রাস্তায় হু হু , আরে তোমার খেলা তুমি নিয়ে সাজাচ্ছো, বাতাসে বেশ পুজো পুজো ভাব, দোলনায় আরেকটু দুলে নিন মাধবী...
আমাদের গল্পটা-আমাদেরই থাক, তাই যায়গাটার নাম গাদিয়াড়া হোক,যেখানে আমরা আসলে কোনোদিনই যাইনি...
Saturday, June 17, 2006
শীত এল ঘুমিয়ে পড়
জু-এর সামনে লম্বা লাইন৷ ভেতরে না জানি কত হই-চই৷
বাগেশ্রী ও রসিদ খান৷
লাল কম্বল৷
বাড়ি গেলাম একরাতের জন্য, অন্তত ফেরার ট্রেনপথে ছেলে যেমন ভাবতে থাকে, ফিরে গিয়ে কি কি দেখবে, পাল্টে গেছে, নতুন হয়েছে এব... ংও মা কোথায় পিঠে ?
আমার এই গঙ্গা নদীটা ইচ্ছে করলে পকটে করে নিয়েই বেড়ান যায়, শুকিয়ে গুটিয়ে এট্টুস৷
পুলওভার পরতে বেশ লাগে, জামা একটু ময়লা হলেও বোঝা যায় না৷
গঙ্গার ঠিক মাঝে আবার ভেসে উঠেছে ছেলেবেলা একটা গোটা চর হয়ে৷ ইঁট ভাটির সাঁকোটি নেই সেখানে৷
দ্রুত লাঙ্গল চালিয়ে উপড়ে ফেলা হচ্ছে ধানের নাড়া গুলি৷ যেখানে সময় থমকে আছে সেখানে মাকড়সা জাল বুনে চলে৷ ভোরের শিশিরে সেখানে সব তাজমহল৷
টুসুর চালে লাউ ধরেছে ক্যাসেটটা খুঁজে পেলাম না, বেশীর ভাগ ক্যাসেটই ঘোরে না৷ তবে খুঁজে পেলে ভালো লাগত, না পেলে ঠান্ডা৷ পুরুলিয়া বাসষ্ট্যান্ডের পেছনে মাইতি রেকর্ডস৷ ঝাড়গ্রাম লেবেল ষন²স করে সাগর, বিজয় মাহাতোর বাড়ি যাওয়ার পাথে৷ ওরঙ্গাবাদ থেকে টানা গাড়িতে বেলডাঙ্গা, ও৷ও খুঁজতে, সে সময়টা জুড়ে আবিস্কৃত হচ্ছেন সলাবত্ মাহাত, সিরাজ বয়াতি এব ংমালবাজারে তার দরবেশী গান শুনব বন্ধে আটকে পড়া ট্রেনে, বাহ বাহ...
চালকুমড়ো বাটা চলছে, শীতের দুপুরে মহিলা মহল চলছে ছাদে, ষন²মশ বড়িগুলি জাভেদ মিঁয়াদাদ ও চেতন শর্মার মত চিরস্নরনীয় হয়ে থাকবে৷ ইউ কে মজলিশে ডিমভর্তি ট্যাংরা মাছের সাথে আবার দেখা পাব তাদের৷
গাজরের হালুয়া চুরি করে খেতে গিয়ে পুড়ে ফেলবে জীভ, বোকা ছেলে জানে না, সবটাই তার, পুড়ুক৷ মাঝে মাঝে কফি খেতে গিয়েও তো এই ভাবে পুড়ে যায় জীভ তার৷
ছোট্ট- ছোট্ট চিরকুটে কয়েকটা বই-এর নাম লিখে অপেক্ষা করবে বইমেলা, মেলায় যাওয়ার সময় সেটা খুঁজে পাওয়া যাবে না কক্ষনও৷ চাট্টি হাবি-জাবি বই কিনে বাড়ির উঁইগুলিকে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে বাঁচিয়ে রাখার৷
প্রচন্ড চিত্কারের মধ্যে মুখ গুঁজে বসে রাত্তির দেড়টা-দুটোয় স্যুপ বা থুকপা রান্না করতে বসবে৷ শূণ্য শূণ্য সার সার বোতলগুলি এক এক করে সাজিয়ে রাখবে রান্নাঘরে উপরের তাকগুলিতে৷ রাষিন আরও বাড়লে নি:সঙ্গতায় নিজেকে সালার জ ংমনে করব৷
নলেনগুড়ের গরম রসগোল্লা খেয়ে বোঝার চেষ্টা করব হাওড়া ও চন্দননগরের তফাত্৷
লেপের ভেতর চলবে যুদ্ধ- যুদ্ধ খেলা৷ এমন কী যুদ্ধের আগে সেতু বন্ধনও৷ লুকিয়ে লেখালেখি ও বইপড়া৷ যেদিন ধরা পড়বে ডায়রি একলাটি ছাদে লুকিয়ে থেকো৷ রোźউরে পাতা নড়া ছায়া দেখো আরো লিখে ফেল দু/একটা পাতা ৷
পড়া কামাই করে মিশে যাই ধু ধু কুয়াশায়৷ রাম তিতো হয় জেনে সন্দেশ কিনে নি সাথে৷ সাথে বন্ধু- ও- বান্ধব৷ মহাপ্রস্থানের পথ৷ নতুন যে বাড়িগুলি তৈরি হচ্ছে উঠে যাও তাদের ছাদে৷ ফেলে এসো প্রিয় মাফলারখানি৷
এই শীত ফিসফিস, আরও কিছু কথা
কমলালেবুর খোসা ধরে এই একটু চিপে দিলাম তোর চোখে৷ রাগ করিস না যেন৷
মুসৌরী থেকে ফিরছি৷ সারা পথ, চায়ের গ্লাস সব ঘন কুয়াশায় মোড়া৷ মুখ দিয়ে কু-ঝিকঝিক রেলগাড়ির মত কুয়াশা বেরিয়ে যায়৷ গোপাল ভাঁড়ের গল্পের সাথে এই বুঝি দেখা হল আবার৷ মোবাইল অবধি ঝাপসা৷ দেরিতে সকাল হলে রঙবাহারে ফুটে ওঠে মুজ:ফরনগর ৷ রঙ-বেরঙে খুশির সাজে সেজে উঠেছে এ গলি ও গলি৷ ঈদ৷ বাচ্চা ছেলে-মেয়ের দল পিটপিটে হাত দিয়ে এট্টু হাত টিপে দেয় আর খুশির বকশিস নিয়ে দৌড় লাগায়৷ ফলে গলিরা আরো রঙিন হয়ে ওঠে৷
অন্য সময় স্লিপার পায়ে ও স্লিপার ক্লাসে ভ্রমণ করা চলে৷ এই শীতে এসি কামরা ছাড়া রেলভ্রমণটি করার যো নেই৷ লাল কম্বলটি না থাকলেও কম্বল তো বটে৷ যেন কাল পিচের রাস্তা বরাবর শুকোতে দেওয়া হয়েছে সোনালী ধান, এমন শয্যা তোমার জন্যে বিছানো৷ পরিপাটি৷ আহা৷
কুয়াশা ভেঙে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে রোদ৷ থিওডোরাস অ্যালোপোলোস নামত দ্রষ্টা ছড়িয়ে দিচ্ছে হাতের রঙিন তাস, টেক্কা সাহেব গোলাম৷ এ তো গেল তোমার হিসেব নিকেশের কথা৷ কিন্তু উল্টোপিঠ? সেখানে পিকচার পোষ্টকার্ড, তাসের দেশ৷ ঘনঘন পিওন আসছে গ্রীটিংস কার্ড নিয়ে৷ সাজিয়ে রাখছ তুমি কাঁচের আলমারী ভরে৷ কোন ছাষনী বা ব্যাবহার করে বসল ঐ শব্দটি, একটু বেয়াড়াভাবে৷ থরে থরে সাজানো পিকচার পোষ্টকার্ড, সব যদি তোমার পাশাপাশি চলে, রেলের কামরাভর্তি যেন অগুনতি জানালা৷ সব আছে ঘিরে, চিরতরে৷ উঁহু৷ অ্যালোপোলোস বলবেন, প্রজেক্টারে সরে সরে যায় ফ্রেম, ফ্রেমগুলি৷ দু হাতে ভিজে যাচ্ছে পাউরুটি ফুলে, পাড়িয়ে পাড়িয়ে যাচ্ছি কল্কেফুলগুলি৷ দু/চারটে সবুজ মসৃন কল্কে ফল ফেটেফুটে ঘন দুধ বেরিয়ে আসছে, এইভাবে সব বিষ ঝরে গেলে খটখটে ডমরুর মত বেজে উঠবে...
এব ংমাঠের ঘাসগুলি ষন²মশ হলুদ হয়ে আসবে৷ লম্বা টানা ছোট বড় তাবু ঢেকে দেবে তাদের মাসখানেকের জন্য৷ রাষিনবেলা সার্চলাইটের আলো নেচে বেড়াবে মফস্বলের কিশোরী শরীরে৷ লাইটহাউসের মত গেড়ে বসে থাকি সমুদ্রের কাছে৷ সারসার টিনের বেড়া দেওয়া, মাঝে মাঝে দু/একটা ফোকরে রাখা চোখ৷ জানিনা শিল্পান্তর আজো ঘটে কিনা৷ বাঘের উগ্র গন্ধে জ্বলে উঠবে সারা শহরের চোখ৷ এক একটা কলাবাগান ট্রাকে করে টেনে এনে প্রাত:রাশ সারবে হস্তিশাবকেরা৷ এইসব গালে ও গল্পে আমরা নেচে উঠব স্কুলের ফিরতি পথে৷ এব ংসার্কাস পরীরা ঝুকঝুক করে নেমে আসবে স্বপ্নে৷ আমি রিংমাষ্টার সেজে...
পিকনিক৷
ছড়িয়ে পড়ল জলরঙ ৷ আসলে জানুয়ারী জুড়ে হরেক ছুটির মেলা৷ ক্লাবঘর,পড়ে পাওয়া ঠাকুরদালান, বিছিয়ে দেওয়া ষিনপলে ইঁদুরের কুটিকুটি সার৷ আমরা এলোমেলো বসে৷ বসে আঁকো, বসে বসে আঁকো৷ ভারিক্কি গলার সুমন ধাক্কা মারবে এই মাঝবয়েসে এসে, কে জানতো? যদি তারে নাই চিনব, এঁকে ফেলি যেমন তেমন সেই মেয়েটির মুখ,একঘেয়ে আটপৌরে গাছপালা মেঘ আকাশ ও পাহাড়ে মুখ লুকানো সুর্য৷ কখনো দোল কখনো চিড়িয়াখানা, বসে আঁকো৷
মায়েরা গুটিগুটি সাজিয়ে এনেছেন ফুলমালি, বাসনওয়ালী, ডাকহরকরা৷ মাইকে ঘনঘন ঘোষণা, পড়ায় মন বসেনা৷ বাইনারি অপজিট স্কুলটির স্পোর্টস চলছে সেখানে৷ যে বোকা হাঁদা গঙ্গারাম স্কুলে বসে থাকে চুপটি করে তার দাগটানা খাতাটি নিয়ে, প্রতিটা লাইনের ফাঁকে দৌড়ে যায় স্কার্ট পরা মেয়েগুলির পা৷ দৌড়, দৌড়, দৌড়৷ লম্বা দৌড়ের পর পরে থাকবে শুধু হাঁফানি৷ রাশভারি দিদ্মণি ছুটতে ছুটতে এসে অ্যালুমিনিয়ামের টোপর টোপর বালতি থেকে প্রত্যেকের হাতে তুলে দেবে একটি করে কমলালেবু ... বোকা ছেলেটা ফি বছর কি গল্পই শুনে যাবে? একটা গল্পও কি লিখে উঠতে পারবেনা আজীবন? বড় হয়েছে, ক্লাসের নিরিখে বেশ উঁচুতে সে এখন, লম্বাও হয়েছে বেশ অনেকটা, ভিড় উদঁচিয়ে দেখতে এখন আর কোন বাঁধা নেই৷ স্কুলফিরতি পথে সে এক গুল্লি ঘুরে যেতেই পারে৷ সিঁদুরের মত ঘসে ঘসে গেছে, পায়ে পায়ে, চুন ছড়ানো লাইনগুলি, চোখ কি ঝাপসা তবে? দু/চারটে বুড়ো খেকুরে লোক তুলে নিচ্ছে চেয়ারগুলি ভাঁজ-টাজ করে৷ মাইক চোঙগুলি ঠোঁট কামড়ে ঘাসে মুখ বুজে, তার খোলা, এলোমেলো৷ আর সারা মাঠ জুড়ে পড়ে আছে কমলালেবুর খোসা,ইত:স্তত৷
পরান জলালি দিয়া রে
ভাঙ্গা কাঁচের শব্দ, ধমনী দিয়ে বয়ে যাওয়া মেট্রো রেল, আমার কঙ্কালই এখন ইচ্ছে গাছ, হলুদ সুতোয় ঝুলিয়ে দও ইচ্ছা-আশাগুলি, তামাক পাতার থেকে পবিষন এই পৃথিবীতে আর কিছু নেই, পোড়ো পোড়ো,সূর্যের ভিতর বসে থাকো তীর্থক্ষেষেনর মত, এলোমেলো গাধারা দৌড় লাগাবে এই প্রাণহীন প্রান্তরে, আমি এই ভাবেই শুয়ে আছি যেমন আকাশ ও এক্লেয়ার্স, মোহবদ্ধ অযুত-নিযুত পরিমাপ, এই ভাবে বেড়ে ওঠা টুকরো টুকরো শাখা ও প্রশাখা ও দাঁতনগুলি, দাঁতেরা তৈরী হয় দংশনের তরে, তাড়কা প্রবল বেগে উঠছেন হেঁসে, জুয়ার বোর্ডে, ছক-গুটি-পাশা, চিহ্নকরণের উপাদানমাষন এই যে করুনা সিন্ধু, ওগো মায়া ওগো বাতায়ন...
চমত্কার৷ নিউক্লিওলাস থেকে গভীরতর স্নেহে এসে যাও, তুমি ব্যকরণমালা, পান্ডব জননী,সারা গোরস্থান জুড়ে সব নাম না জানা বিদেশী ফুল, কেটলি মুখে নির্গলিত বাস্প, মাইলস্টোন, মাইলস্টোন,সুর্যের বাইরে এই ভাবে দাগ কাটে ছেলেরা, ইয়ু ংকি বলতেন জানি না, রবিবার সকালে ওজনে তুলে দও যত বাসী কাগজ,দূর করে দাও যত মায়া আশা ক্ষেদ, সূচীশিল্পীরা খাদ্যবস্তুর নীচের টেবিলে দাগ কাটেন সূতির চাদরে, প্রবল নেশায় সুর্য এখন ঘড়ি, চোখ ও মুখ ঝলসে যাবে তবু লেবু ফুলের গন্ধটি তুমি পাবে না, এস তার চাইতে শুয়ে থাকি এই ঘাসগুলির নীচে, বত্সরে যুক্ত হোক নক্ষষন ও বত্সরপু, মাটির তলে বুঝি এখন ও জলের প্রবাহ কলকল, ভাব না, মিনারেল ওয়াটারের কোনো কারখানা খোলা যায় কিনা...
শব্দের কুচকাওয়াজ ও বিদায় জোতিষ্ক, হুংকার, রণডঙ্কা
এইভাবে উপযাচক হয়ে তার মৃত্যুর কথা লিপিবদ্ধ করার কোন অধিকার আমার ছিলনা যদিনা সেই উত্তরের দিনগুলোতে তার ঘনঘন মৃত্যুপূর্ববর্তি রুমাল নাড়া আমাকে খাঁচার জ্যামিতিতে উত্সুক করে তোলে৷ সে তো অক্ষরমাষন, অন্যকিছু নয়৷ যবনিকা নেমে আসে, নেমে আসে চুল, সহজাত৷ কারুকর্মের রণহুঙ্কার আমরা সন্তর্পণে লক্ষ্য করতে শুরু করছি তখন৷ রাজমোহন বেশিক্ষণ নিদ্রিত থাকবেননা, কুকুরদের সম্পর্কেও দু/একটা কথা জানা হয়ে যাবে অগোচরে, রুবির সঙ্গে যে দু/একবার ডায়মন্ড হারবারে লুকিয়ে চুরিয়েও যাবনা একথা স্বীকার করার মত কোন মন্ত্রী আসেননি তখনো বিধানসভায়৷ পার্লামেন্টেরিয়ান বলতে তখন হীরেনবাবু, লেখক বলতে কর্পোরেশনে চাকরি করা অথবা বর্গক্ষেষেনর চারভাগের একভাগ, হ্যা ঁতোমরা যারা কলকাতা কিংবা রাত-প্যাঁচার মত ভালবাসায় অভিযোচিত করনি৷ রাষিন দ্বিপ্রহরে যখন কমলকুমার হয়ে উঠছেন ল্যাম্পপোস্ট, মানিকবাবু বারোদুয়ারীর অপর একটি জানালা, তুমি থেকে যাও সঙ্গোপনে, আমরা কেবল চাবুকের শব্দ শুনি সেই চলচ্চিত্রটির সাউন্ডট্র্যাকে৷
... আচ্ছা, বলে রাখা ভাল, আমি যে চে গুয়েভারার মার্কা সাঁটা লাল গে পিরে কারোর স্বপক্ষে হাত তুলছি না,নেহাত, হাত যদি তুলি সে, অমরত্বের প্রার্থনা, করমর্দনের জন্য৷ কনফেশনে এরকম হ্যাঁ,হ্যাঁ থাকে, তাই আরো একবার হ্যাঁ বলি, একবার, দুবার, চারবার ,যথাচার, যতবার খুশি, হ্যাঁ আমি শ্রী সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুপরবর্তী জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করছি৷ আসলে এখন আর নতুন করে অসুখ বাড়িয়ে নেওয়ার কোন সময় নেই, ক্লোরোফিলের ছষনছায়ায় ও অন্টিবায়োটিকের বাকচাতুর্যে মুগ্ধ থাকুন আপনারা৷ মাসান্তে সার্কাসের তাবু উঠিয়ে নিয়ে যান এই শীতশহর থেকে, দু/চারটে ঘাস সাদা হয়ে থাকুক অন্তরালে, আপনারা চলে গেছেন এ শহর ছেড়ে৷ নোঙর, পর্ব উত্পন্নকারী হাঙর ও জলাশয়, জরাগ্রস্থ স্টিফেন স্পিলবার্গ, মিনিবুক, হিরোশিমা মাই লাভ সব যাক ছেড়ে, জলের গভীরে...
... ইউক্লীডের চতুস্পার্শ, চতুরঙ্গজ কুমার সাহানী যেন বিবৃতি দেবেন বাসের টিকিটের পেছনে, রমাপদ চৌধুরী আধঘন্টায় লিখে ফেলুন "না" শব্দটি, তো? শুরু হচ্ছে পরবর্তী নাটক এখন, দেবেশবাবু কর্ণার কিক থেকে গোল খেলে, সে বড় সুখের সময় নয়৷ দিনরাষিন, দিনরাষিন, জঙ্গল বা কলকাতার, অলিন্দ বা নিলয়ের, তোমার ও আমার পূর্ববর্তী বা পরবর্তী, মৃত্যুয় থেমে যেওনা বিশেষণে, তার চাইতে এসো আমরা কলম বদল করি৷
... দুপুরবেলা৷ উড়ে যাচ্ছে ধবল বক, ছাদের কার্নিশে, রঙিন অন্তর্বাসগুচ্ছ, জল ছুঁচ্ছ মাছরাঙা , হাঁতুড়ি দিয়ে ভাঙ্গা হচ্ছে কয়লা যেন রোপওয়ের স্নিগ্ধতা খনির অন্তরালে, আমিও দু/একটা শব্দ লেখার আগে এলোমেলো করে দিতে চাই নিজেকে আরো, যেন বিবিধভারতী৷ দুপুরবেলা ধবল বক দুলে ওঠা অন্তর্বাসগুচ্ছ তোমরা কি শব্দ হয়ে যাবে? নাকি প্রতিস্থাপিত হবে এই শহরের বুকে৷ এঁকেবেঁকে পাহাড়ী মল ডালহৌসির দর্পচেয়ারে কুন্দেরা গল্প জুড়েছেন ইশ্বরের সাথে, আমার নখর তোমার শব্দের বঞ্চনায় ধারাল হয়ে উঠছে ষন²মশ, ষন²মে আলো আসিতেছে, আসিতেছে ... হ্যা... ঁএর পরেই আমার ইচ্ছে করবে আমি ও বনবিহারী কিংবা বন ও মনবিহারী বা জঙ্গলের দিনরাষিন অথবা কলকাতার দিনরাষিন থেকে উদ্ধৃত করার সুতরা, ংবহরমপুর থেকে ফিরছি, দীর্ঘ রাস্তা যেমন ছেলেবেলা থেকেই শুরু হয়, গাড়ি যেমন ব্রেক কষে, কেউ রাস্তা পার হয়, কখন যে বর্ণমালা ছুটে গেল সোনালী বর্ণ শৃগাল হয়ে, তার প্রতিটি লোমই যেন ইশ্বরপ্রদত্ত বা নিষিদ্ধ বিন্যাসে নিহিত, এ আমাদের খবরের কাগজগুলি, হ্যা ঁএকটা কাজ করি, আসুন পুড়িয়ে মারি
আপনাদের, শব্দরাজীসমূহ, হ্যাঁ দেবেশবাবু, যুধিষ্টিরকে পাঁচটা গ্রাম দিয়ে দিলে আর কুরুক্ষেষেনর যুদ্ধ বলে, আর কিছু থাকতনা...
পাঠককে প্রণাম৷
শীত এল ঘুমিয়ে পড়
জু-এর সামনে লম্বা লাইন৷ ভেতরে না জানি কত হই-চই৷
বাগেশ্রী ও রসিদ খান৷
লাল কম্বল৷
বাড়ি গেলাম একরাতের জন্য, অন্তত ফেরার ট্রেনপথে ছেলে যেমন ভাবতে থাকে, ফিরে গিয়ে কি কি দেখবে, পাল্টে গেছে, নতুন হয়েছে এবm... ও মা কোথায় পিঠে ?
আমার এই গঙ্গা নদীটা ইচ্ছে করলে পকটে করে নিয়েই বেড়ান যায়, শুকিয়ে গুটিয়ে এট্টুস৷
পুলওভার পরতে বেশ লাগে, জামা একটু ময়লা হলেও বোঝা যায় না৷
গঙ্গার ঠিক মাঝে আবার ভেসে উঠেছে ছেলেবেলা একটা গোটা চর হয়ে৷ ইঁট ভাটির সাঁকোটি নেই সেখানে৷
দ্রুত লাঙ্গল চালিয়ে উপড়ে ফেলা হচ্ছে ধানের নাড়া গুলি৷ যেখানে সময় থমকে আছে সেখানে মাকড়সা জাল বুনে চলে৷ ভোরের শিশিরে সেখানে সব তাজমহল৷
টুসুর চালে লাউ ধরেছে ক্যাসেটটা খুঁজে পেলাম না, বেশীর ভাগ ক্যাসেটই ঘোরে না৷ তবে খুঁজে পেলে ভালো লাগত, না পেলে ঠান্ডা৷ পুরুলিয়া বাসষ্ট্যান্ডের পেছনে মাইতি রেকর্ডস৷ ঝাড়গ্রাম লেবেল ষন²স করে সাগর, বিজয় মাহাতোর বাড়ি যাওয়ার পাথে৷ ওরঙ্গাবাদ থেকে টানা গাড়িতে বেলডাঙ্গা, ও৷ও খুঁজতে, সে সময়টা জুড়ে আবিস্কৃত হচ্ছেন সলাবত্ মাহাত, সিরাজ বয়াতি এব ংমালবাজারে তার দরবেশী গান শুনব বন্ধে আটকে পড়া ট্রেনে, বাহ বাহ...
চালকুমড়ো বাটা চলছে, শীতের দুপুরে মহিলা মহল চলছে ছাদে, kramash বড়িগুলি জাভেদ মিঁয়াদাদ ও চেতন শর্মার মত চিরস্নরনীয় হয়ে থাকবে৷ ইউ কে মজলিশে ডিমভর্তি ট্যাংরা মাছের সাথে আবার দেখা পাব তাদের৷
গাজরের হালুয়া চুরি করে খেতে গিয়ে পুড়ে ফেলবে জীভ, বোকা ছেলে জানে না, সবটাই তার, পুড়ুক৷ মাঝে মাঝে কফি খেতে গিয়েও তো এই ভাবে পুড়ে যায় জীভ তার৷
ছোট্ট- ছোট্ট চিরকুটে কয়েকটা বই-এর নাম লিখে অপেক্ষা করবে বইমেলা, মেলায় যাওয়ার সময় সেটা খুঁজে পাওয়া যাবে না কক্ষনও৷ চাট্টি হাবি-জাবি বই কিনে বাড়ির উঁইগুলিকে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে বাঁচিয়ে রাখার৷
প্রচন্ড চিত্কারের মধ্যে মুখ গুঁজে বসে রাত্তির দেড়টা-দুটোয় স্যুপ বা থুকপা রান্না করতে বসবে৷ শূণ্য শূণ্য সার সার বোতলগুলি এক এক করে সাজিয়ে রাখবে রান্নাঘরে উপরের তাকগুলিতে৷ রাষিন আরও বাড়লে নি:সঙ্গতায় নিজেকে সালার জm মনে করব৷
নলেনগুড়ের গরম রসগোল্লা খেয়ে বোঝার চেষ্টা করব হাওড়া ও চন্দননগরের তফাত্৷
লেপের ভেতর চলবে যুদ্ধ- যুদ্ধ খেলা৷ এমন কী যুদ্ধের আগে সেতু বন্ধনও৷ লুকিয়ে লেখালেখি ও বইপড়া৷ যেদিন ধরা পড়বে ডায়রি একলাটি ছাদে লুকিয়ে থেকো৷ রোdduরে পাতা নড়া ছায়া দেখো আরো লিখে ফেল দু/একটা পাতা ৷
পড়া কামাই করে মিশে যাই ধু ধু কুয়াশায়৷ রাম তিতো হয় জেনে সন্দেশ কিনে নি সাথে৷ সাথে বন্ধু- ও- বান্ধব৷ মহাপ্রস্থানের পথ৷ নতুন যে বাড়িগুলি তৈরি হচ্ছে উঠে যাও তাদের ছাদে৷ ফেলে এসো প্রিয় মাফলারখানি৷
অর্জুনের লক্ষ্যভেদ ও অন্যান্য গল্প
…তোমরা তো দূর্লভ ও কাত্যায়নীর কথা জান, তাই আর নতুন করে বলার কিছু নেই৷
একটা লোক ছিল পাঁড় মাতাল, রাস্তার পর শুয়ে শুয়ে, লর্ডসের খুব কাছাকাছি, আনোয়ার শাহ, ভাবে আমি কোন এক শাহ,
আকাশে এক গোল চাঁদ পিটিস পিটিস চায়, আস্তে আস্তে চাঁদ দ্রবীভূত হয়ে যায় তার পাকস্থলীতে, কি ঝামেলা রে বাবা, এই
মালটা আবার কে, ভাবলো দুই টিনিয়াসোলিয়াম…
টি 1 - এই কি অমৃত ভান্ড?
টি 2 - দূর, তোর আবার সবে তেই রাহু কেতু কেস !
টি 3- এই, সেদিন টিভিতে দেখলে না?
টি 2 - ক্যাটারিনা কঈফ? ও কি নাচ, গোলা৷৷
টি 1- না , না আমি সে কথা বলি নি তো?
টি 2- তুই কাটা, আমি গুরু হ্যাংওভারে মরি৷৷৷ উল্লুস!
টি 2 - না বাবা না, আমি সে পাগল কিছুতেই হব না৷
টি 3 - এই যে জেমসরা এসেছিল যেইদিন, কোথায় ছিলে তুমি ?
টি 1- আসলে অমৃতের ভান্ড ইমেজটার মধ্যে , লক্ষ্মী আছে না, বেশ ধোঁয়া, ধোঁয়া,… হাতে অমৃতের ভান্ড, আরে না: কিশোরকুমার…
… কথা চলে, বিষষিন²য়া, মানুষ মশগুল থাকে আপন ষিনভূজে, তাই থাক, আমরা বর ংসেই রাস্তায় শুয়ে থাকা লোকটার কথা ভাবি, নীরবতা পালনের মত, আঁচল উড়িয়ে তুমি বেশ চলে যাও অটোতে, ভুকভুক ওড়ে ধোঁয়া, তুমি পেয়ে গেছো তোমার আজ রাতের মানুষটিকে, তার কথা ভেবো, বর ংথাকো অনাহারে, লিখো সেই কথা, আরো দু-চারটে জখজ উড়ে আসে, যেন দ্রৌপদী এবার স্বয়ম্বরা…
… মানুষ শুয়ে থাকে রাস্তায় ও রাস্তায়, শীত নামে, অ্যান্টিবায়োটিক ঊত্পন্নের লক্ষ্যে পৃথিবীর গভীরতর অসুখ এখন, লোকটি একবার চাঁদটি খায় ও বের করে ছেড়ে দেয় আকাশে, একটু আগে জয় গোস্বামী বাসের রড ধরে ঝুলতে ঝুলতে কবি হয়ে গেছেন, হাতে তার ব্যার্থ ইয়ো-ইয়ো, মানুষটি শুয়ে থাকে প্রবল ও পরাষন²ম এবা ংপাকস্থলী শুদ্ধ…
টিনিয়াসোনারা এখন কথা বলে সেক্স নির্ধারণ ও মোবাইল ফোন নিয়ে…
টি 2- তুই রিংটোন যে ডাউনলোড করলি , আমায় পাঠালি না তো?
টি 1 - তোর নামে লাগিয়ে দিয়েছি…
টি 2 - কই শোনা…
টি 1 - মিস কল দে…
টি 3 - আমার বাপু ফোনের আওয়াজ শুনলেই বুকের ভেতর ধড়-ফড় করে …
টি 2 - ও তার জন্যেই এই মাদুলিটা৷৷
টি 3 - আমার দাদা করে দিয়েছে…
( Ring tone ) এই পথ যদি না শেষ হয়…
বেজে ওঠে ফোন, সুতরা ংকারুর বুক ধড়ফড়, কারো বুক ভেসে যায় আনন্দে৷
তিন ভাগ জল ও নিউটনের আপেল
প্রথম গল্প
...এক দেশে এক রাজা ছিলেন৷ খান 70/75 রানি,খানসামা বাঁদী ধরলে আরো শ দেড়েক শয্যার সংকল্প৷ পাঁচতলা রাজপ্রাসাদে কোন ঘরে যে কোন রানী বসে আছেন তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই৷ সন্ধ্যায় পরাষন²আন্ত রাজা কোন এক ঘরে ঢুকে পড়ে নিশ্চিন্ত হন৷কোন এক শয্যায়৷ রাস্তা বাতলানোর মত কোন মানচিষন তৈরি করার কথা আজ পর্যন্ত তার মাথায় ও আসেনি তাই বেগুনী-লাল-জরীর ফুলাকরীর আলখাল্লার জেবের মধ্যে মানচিষেনর দেখা পাওয়াটা খুব আশ্চর্যের৷ আর রাজাও ক্লান্ত, সন্ধ্যা হয়ে আসছে দ্রুত৷ কাজেই ভুল রাস্তা বা রাস্তা ভুল যাই হোক রাজার পরিচর্যা বাঁধা৷
যুদ্ধজয় মানে নতুন বিবাহ৷ ফলে যখন যুদ্ধে যেতেন, বা নতুন বিবাহ করেন,সেটা প্রায়শই,তাই প্রায়শই ভাবেন, নতুন রানীর ঘরের আন্দাজ, অর্থাত্ তার একটা নকশা,রাস্তা বাতলানোর মানচিষন তার জেবে থাকলে মন্দ হয়না৷ কি করে মানচিষন বানান যায়? রাজা ভাবেন, ভাবতে থাকেন, স্বপ্নে দেখেন তার প্রিয় কুকুরটি চলছে তার সাথে,এইভাবে বলাটা বোধ হয় ঠিক নয়,অন্যের গোপন স্বপ্ন ফাঁস করে দেব? পেটেন্ট বলেও তো একটা কথা আছে, হাচ, এয়ারটেল, ব্লা, ব্লা, ব্লা চুটিয়ে ব্যবসা তা রাজার সহ্য হবে কেন৷
ধরে নিয়ে এলেন পাঠশলার কোন এক ভুগোলের মাষ্টারকে সে রাজপুরীতে এসে অনেক ছক-আঁক কষল, এ নকশা সে নকশা, তারপরে রাজা যখন মিলিয়ে দেখতে চান, ভো ঁভাঁ৷ ফলে নির্ভূল নকশার লক্ষ্যে, রোজ রাতে,নকশা পড়ার জন্যে হাজির থাকতে হয় ভূগোলের মাষ্টারকে, ধুস এ তো R্তুপর্ণর অন্তরমহলের গল্প হয়ে যাচ্ছে৷ তার চেয়ে মানচিষন ফানচিষন ছিঁড়ে কুটি কুটি করে ফেল, সেটাই বেশ হবে,পথ ঘাট নিজে নিজে ফুটে উঠবে জ্যোত্স্নার আলোয়,কাজেই রাজার পথ ভূল হওয়ার যো নেই...
দ্বিতীয় গল্প
...বড় বড় পীচের ড্রামে থলথল করছে গলানো পীচ৷ একটা ছোট্ট মেয়ে, যে ড্রাম বরাবর কিছুতেই নাগাল পায়না,আরো একটা খালি ড্রাম শুইয়ে, সেই গরম হল্কায় নাক ডুবিয়ে পরখ করছে কতটা গলল৷ রাস্তা তৈরি হচ্ছে৷ রাস্তা মেরামত ও হয়৷ কাজেই কেও যখন তাকে জিজ্ঞাসা করে এ রাস্তা কোথায় গিয়েছে তখন তার ভাষার সমস্যা হয়, ভাবলেশহীণ৷ আজ অব্দি কোন রাস্তার নাম সে জানেনা,গতানুগতিক৷ যদিও গতি ও অনুপাতের অংকে সে সিদ্ধহস্ত 5:2::2:1,আর ছুটে চলা৷ কখনো এক ট্রাকে গাদাগাদি হয়ে পীচের ড্রামের সাথে৷ যদি এইরকম শীতকাল হয় তাহলে পীচের ড্রামের পাশে উঠে বারবার দেখে নেয়া যায় কতটা গলল পীচ অথবা রাষেন ট্রাকের ওপর গুটিশুটি মেরে শোয়ানো খলই পীচের ড্রামের ভিতর, মাতৃজঠরের মত, যে তার বেরিয়ে আসার রাস্তা জানেনা...
...গরমকাল এলে,বসন্তের পর,ভারী ভাল লাগে,পথঘাট ভেঙে বসে থাকো রোলারের ওপর,রোলার ও ওপরে চলে কেননা বসন্তের হাওয়া৷ কে রোলারের ওপরে কে রোলারের নীচে এই সব ভাবতে ভাবতে সব রাস্তা কালো হয়ে যায়,গরম গলানো পীচ জমাট বেঁধে থাকে...
তৃতীয় গল্প
...বুড়োরা প্রতিদিন সন্ধ্যেবেলায় এই গাছটার তলায় গজল্লা করে৷ কার বাড়ির বৌমা কোন সিরিয়াল দেখে, কাদের বাড়ির বৌ রাষিনবাসে সারারাত অপেক্ষা করে বারান্দায়,এমনকি কোন বৌটা বাচ্চা চায়না বলে ঝগড়া করে রাষিন দ্বিপ্রহরে৷ যখন শুনশান বটগাছতলা তখনই জমতে থাকে গল্প,গল্পেরা তৈরি হয়,যে যার মত দেখতে শুনতে থাকে৷ রোজ বিকেলবেলা সাত/আটটা বুড়োমানুষ জমা হয় এই বটগাছটার তলে৷ বটগাছ রোজই শোনে এইসব কথা, সেও বুড়ো হয়েছে বিস্তর, কাজেই অংশগ্রহণে বাঁধা নেই৷ কাকে বলে অংশগ্রহণ? সেকি কেবলই শোনে? তারও কত কিছু বলার আছে, কে এসে চিঠি রেখে যায় তার গোপন কোঠরে আর নিয়ে যায় স্কুলফেরত কোন সে মেয়েটি,কারা এসে বসে থাকে রোজ দুপুরবেলা,নিশ্চুপ,হাতে হাতে হাত ধরে৷ অথচ তার বলার কোন রাস্তা জানা নেই,পাতা খসে পড়ে যায়,কেবল৷
...বুড়ো বট, ডালপালা মেলে দেওয়া বুড়ো বট,নদী মাটি ধরে রাখা বুড়ো বট, পাখি পাখি ঘিরে দেওয়া বুড়ো বট, কেবল রাস্তা জানেনা৷ জানেনা বললেই হয়? তাকে জানতেই হয়, কোন রাস্তা ধরে হেঁটে আসবে সেই যুবক যুবতী, কোন রাস্তার শেষে কোন এক বালিকা বিদ্যালয়, কোন রাস্তা ধরে হেঁটে আসে গল্পের অভিসারী রাধা,রাতপোষাকে একাকিনী বারান্দায়৷ রোজ বিকেলে বুড়োর দল এসে জমা হয় বটগাছের নিচে৷ পরচর্চার ইপ্সিত প্রবাহে উষ্ঞতার পদসঞ্চার হয়,আসলে যে রাস্তা বরাবর হেঁটে এসেছে তারা,কোন রাস্তার শেষে রাখা আছে বাড়ি,সংসার,নিভৃত গল্প কিছু তা তারা ভালভাবেই জানে দিনের আলোর মত৷ নিস্তার কোথায়? আসলে এইসব ছেড়ে-ছুড়ে অন্য রাস্তায় হরিদ্বারে গঙ্গার ঘাটে, হিমালয়ের কোন গোপন গুহায়, বৃদ্ধাশ্রমে ধুকে ধুকে মরা বুড়োদের প্রত্যেকের একটা নিজস্ব বটতলা থাকে, পালাবার পথ থাকেনা...
(চলবে)
1 লা ডিসেম্বর থেকে শুরু
পোষ্টার, ক্যালেন্ডার তোলা থাক, কিছু ছবি, সরা পটে, মানীদার এলোমেলো সই, আসলে এই ভাবে শুরু হয়ে গেল নন্দন মেলা, আহা উহু শীত পড়ে গেল রে...
আহা উহু শীত নয়, ছবি কেনার লম্বা লাইন, আমি কিনি, এক সংখ্যা "নন্দন", বস্তুত অংশুমানদার সাথেই জমত গল্প, এবং বিশেষত ফেলিনি অথবা মানেকা ভিত্তি,সয়দা মুখচোরা৷৷ এই ভাবে কিছু সকাল হয়ে ওঠো বর্ণময় ও বিশ্বভারতী ফাষ্ট প্যাসোর ও নবদ্বীপ সুইটস৷
... চারিদিক ছেয়ে আছে আলোয়, আলোয়, ও আমার ক্রাফট বিল্ডিং এ মাণীদা যখন এঁকে ফেলেছেন আধুনিকতার সহজপাঠ,এমন ভাবেই দুয়ো দেবেন বরোদা গোষ্ঠী, তোবা তোবা, সিয়াজিরাও কোথায় তোমার চীনাবট ? নন্দন মেলায় সেই চীনা বটে ঝুলছে সহস্র নৌকা, রং বেরং, কোনোবছর দেখেছি, এই গাছ মির্চ মশালা হয়ে যেতে, ও গো কোথায় তোমার ম্যাজিক আর কোথায় তোমার চরন, তার টের কি পাও?
...আসুন আমরা প্রবেশ করি জগঝম্প অপেরায়, ভুপেন খক্কর মরেও রেহাই পাবেন না,গোলাম শেখ তামাদি হয়ে যান,এই যে দড়ির জটাজুট এর জন্য আসুন মৃণালিনী মুখোপাধ্যায় আসুন তার নাম এক লাইনে সেরে ফেলি, সারা কলাভবন চত্বর জুড়ে গজিয়ে উঠুক বিভিন্ন সভ্যতা, হেঁটে বেড়াক কচ্ছপ, মায়ামৃগ, উড়ন্ত ফড়ি, ংসব ঐ দড়ি জটাজুট সারে৷৷৷ এই যে দেওয়াল ফুটো করে ঢুকে যাচ্ছে হ্যামলিনের ইদুরগুলো তার খোঁজ জীবনানন্দ খোঁজেননি ভাস্কর্য ভবনের দেওয়ালে, ছুটকো ছটকা কার্ড পাঁচ
দশ পনের বেরিয়ে এলো পিনাকী বড়ুয়ার সাথে...
...কাল সকালে এই চীনা বটের তলে গনেশ পাইন, লালুপ্রসাদ সাউ, সনত্ করদের আলোচনা ফাঁকে আমি ও ঢুকে পড়ি রবিকুমারে সাথে, না রে, এ তোদের রবি নয়৷৷৷ দীপকদা থাকলে কোম্পানি পেন্টিং, লালুদার কালিঘাটের পট, আসলে নন্দনমেলা প্রতি বছরই হয়...
1) ক্যান্টিনের পাশে ওরকম ইনার আই
2) পোট্রেট, পোট্রেট, সোডিয়াম ভেপারহীন রূপশয্যা,ইচ্ছা করলে বেঁধে নাও চুল
3) কোমর পর্যন্ত বিনুনী, দুলে দুলে যাও, সময় কোথায় দোলে
4) এলোমেলো লিফলেট, আসলে একটা লেখা চাই, যোগেনদা
5) হিন্দি গানের সাথে বিড়লা হষ্টেলের মাথায় নেচে ওঠে অবোধ কিশোরীরা
6) শুচিব্রত দেব আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করতেই থাকেন,স্থান ও রামকিঙ্কর
7) দাদার বোলপুর পোষ্ট অফিস বাড়ি থাক রতনপল্লীতে এসো, তখন নিশ্চয়ই গাছেতে বাদুড়ঝোলা বোতলগুলি নয়,আবেগে
8) একটা সাইকেল পাওয়া গেলে বেশ হত, আঁকিবুকি চলে যাও শীতের চাদর মোড়া ঘন মাঠ ঘন সন্নিবেশে, এবং সেই ডাক্তারটার গল্প
9) আর কি বাকি রইল বল তো বলার, আসলে রাতের খাওয়া খেতাম যেখানে, সিনেমাতলা ছড়িয়ে, ভুলে গেছি, ফিরতি পথ
10) শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস, কোনদিকে যাবে, মলুটি বা কোলকাতা, আচ্ছা রানওয়ে তো ফাঁকাই পড়ে থাকে, যাও উড়ে ...
হ্যাঁ, এইভাবে রং এ চুবিয়ে পাল্টে দাও দিন, ক্যালেন্ডারে রং বদলের কি দরকার বানিয়ে নাও তারিখ শরীর, এতক্ষণ যা লেখা হল তার কোন অর্থ হয়না, অনর্থক পরিশ্রম আপনাদের এবং টাইপিষ্টের, আসলে ঐ সেই ফুকো আছেন না, এখানেও পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে এসে দাড়িয়েছেন, কাজেই আপনার তারিখ আপনার আমার তারিখ আমার, ধুস, আমাদের...
লাল না, নীল না
এটা না, ওটা না
এদিকে না, ওদিকে না
কি চাই, চাইনা
প্রসঙ্গ 1
----
সেপাক টাকরো৷ সিঙ্গাপুর৷ ওখানেও একটা লেকচার দিয়ে দিতে পারো, বডি আর্ট ভিডিও আর্ট, আরে তোর দুটো ছেঁড়া পাতা ঘুড়ি গোত্ খেয়ে নেমে এল, কোন চেন্নাই বন্দরে, তুই কি বই খুঁজিস, রবিবার সকাল হলে এইভাবে খড়কুটো বই দরিয়াগ জুড়ে, এই শীত তবু দেখ ঘাম ঝরছে চুলের ভিতর
প্রসঙ্গ 2
----
জল আছে, গ্লাস আছে, শূণ্য - পূর্ণ তর্ক আছে, শিবাজীনগর ষ্টেশন পর্যন্ত যাও, নেশার খোরাক, সিম্বির পিছনে, আহুন্দ গাড়োয়াল ঢাল, অটো কি পিছন দিকে নেমে আসবে? অটো এগিয়ে গেল তোমার থলে থেকে গড়িয়ে যাচ্ছে কমলালেবুগুলো,
গড়িয়ে গেল গড়িয়ে গেল, সেখানেও বঙ্কিমচন্দ্র, গড়িয়ে গেল গড়িয়ে গেল
প্রসঙ্গ 3
----
এই যে ছইপাশ লেখা, খালাসিটোলার সরু সরু বেঞ্চ, মধ্যমণি কমলকুমার, মধ্যরাত্রি যাপনের সক্রেটিস, এইসব এলোমেলো
এলোমেলো, এলোচুল এলোমেলো, এল ভূল এলোমেলো, যেমন ছবিতে কিশোরী মানায় ভাল, সস্তা সম্বল নয়, ঢের কাঠ-খড়,
শব্দ বর্ণ বর্ণমালা, ক্ষয় ক্ষয় ক্ষয়, যেমন তোমার ঐ তারিখের চিঠি
প্রসঙ্গান্তর
----
হাওয়া ও হাওয়া, নাসিকারন্ধ জুড়ে, আকাশ গোলাপী হল, মা এল চূড়ে, দমদম দমদম, দূর সে নগর, এসো থামি এইখানে
শিরা কাহিনী
গাছের তলায় যেমন থাকে, আমারও কিছু শিরা ছিল, আমার শরীরে, শরীরটা যদিও গাছ ছিলনা, শিরাগুলোকে আগাছা ভাবলেও ক্ষতি নেই, ছিল ব্যস, ছিল৷
শিরা বেয়ে সমস্ত রুটে, বে-রুটে, স্কয়ার রুটে, রুটি রুটি আইল্যান্ড ঘিরে চরে বেড়াত সমস্ত অটো, শিষ দিতে দিতে এ শিস মহল থেকে ও শিস মহল৷ শিশি-বোতলদের কেউ কেউ দদ দদ করতে করতে চার্লি চ্যাপলিন হয়ে যায়, ফলত: ছি: ছি: আমি তোমায় দেখেছি, শিরায় শিরায় যেমন উত্তেজনা, হাওয়া ছোটে, পাল বয়৷ বোতলের গায়ে জড়িয়ে দেওয়া ও উপ-শিরা, উপ-সংহার উপহার দেওয়ার মত পার্থপ্রতিম দেব সেগুলো জড়িয়ে দেয় গায়ে, শিশি বোতলদের গায়ে, বোতল বোতল থাকেনা, বাসুকি সাপের মত গোটানো প্যাচানো কেস, কেসের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেল অমৃত সঘন, বা কেশদামে৷ শিরার ভেতর তোমাদের বাগান, হলুদ বেগুনী ফুল, সেলোফেন পেপার, খসখস, চারটাকা ভাড়া আন্দোলন৷ শিরার উপর বসতবাড়িগুলি, এ তলায় পাঙ্খা বাড়ি, ও তল্লাট হিলকার্ট৷ না নড়া, না চড়া বাড়িগুলি, বড় কুড়ে, কুড়েঘর নয়৷ রক্তে লাল আকাশ, আমার শিরা ও উপশিরাগুলি অপসৃয়মান জেট পরবর্তী ধাবমান রেখা, প্যারাসুট সুতো সংকল্প, হেলিকপ্টার ডানা, বনবন৷
যদি চাকুর জন্ম হয়, শিরাগুলি কাট কুচিকুচি, ভাজো ছাঁকা বাদামতেলে, হেব্বি স্বাদ সুগন্ধ অমলিন, ভুরু কুঁচকানো চোখ, যদি মনে পড়ে৷ শিরাগুলি, ভূমিকায় লেপ্টে থাকা চাদর ও অলক কুন্তল, বসতবাড়ি ও উপচিকীর্ষু সঘন নীলে রাষিন টেনে আনে, তারায় তারায়, ভ্যান গঘ রাষিন৷ বিষ রক্ত বয়ে চল শিরা, হয়ে ওঠ তরবারী আভিজাত্যের কোপে, কাস্তে যেন বাঁকা চাঁদ, হয়ে ওঠ গান, নিশীথ সমুদ্রে, সার সার জাহাজের আনাগোনা, হেলেন দাঁড়াবেন এসে, ট্রয় নগরী ও উত্তেজনা৷ সামাল সামাল, হেইয়ো হেইয়ো ভাই, চিকচিক বালি ভরে ওঠে সব মৃত মাছগুলি, জাল টানা শেষ, নৌকা ফিরেছে পাড়ে, বিন্দু হয়ে ওঠা আলোকপুরে জাহাজগুলি দীর্ঘ:শ্বাস ফেলছে পাড়ে এসে, মৃত মৃত মৃত মাছগুলি, মৃত চোখ ও চোখ ও চোখের সমন্বয়৷ কাজেই শান্ত এখন শিরা ঢিলেঢালা রাষিনর পাহারা, জোয়ার এখন ভাটা, জীবন তাই সাদামাটা৷
যদি এগুলো-ই হয়ে ওঠে তোমার রেলের লাইন, ট্রাম ট্র্যাকগুলি বেঁধে ফেল বান্ডিল বান্ডিল সুতোয়, পড়ে থাকে ষ্টেশন ও পাউরুটি, কুকুরেরা খেলা করে, বাঁকা লেজ সোজা করে, সহস্র জীবন, অনুক্ষণ, গতি গতি গতি, অগতির গতি, সশব্দে ছুটে যাও ট্রেন, বিন্দু ঘামগুলি জেগেছে শরীরে, উপাস্য কেবল নয়, চাহিবারে হয়, চাঁইবাসা ব্যান্ডেল মুম্বাই৷ প্রশ্নহীন শিরাগুলি হয়ে যায় ভারতের রাজনৈতিক নকশা, মানচিষন জেগে ওঠে শিরায় শিরায়, হাতের মুদ্রায় কার্জন দেখাবেন কথাকলি, তালু জুড়ে রঙ, সবুজের উপর সাদা রঙ, সরের প্রলেপ, কম্বল চাদর লেপ, সিটি ও প্রেশার কুকার, গড়িয়ে পড়া জলবিন্দুগুলি গাষনময়, ভেঙে যায় শিরা ও উপশিরায়, শরীরের উপর ছোট্ট শরীরের অংশ ফুঁসে ফুঁসে ওঠে, বেজে ওঠে সিটি ঘাম কুকার৷
লতায় পাতায়, সম্পর্ক যেমন বাড়ে, শিরায় শিরায় ডালে ডালে পাতায় পাতায় গেরস্থালী, কাঠবেড়ালী, পেয়ারা তুমি খাও? পুটুস পাটুস, ছাদঘরে যাও, পাকেচষেন², চষন²রেলে বাগবাজার, ছেঁড়া তার ও সরোদে, রৌদ্রময় জীবন তোমার,স্বক্ষেদে শিরাগুলি সুবিন্যস্ত, যেন ছাতার উল্টোপিঠ, থরে থরে সাজানো, পাতাল সিড়ি কাঁচের চুড়ি স্লাইস পাউরুটি৷ কথা নেই, বার্তা নেই, প্রিয়া তুমি ফুটে ওঠ ডিজিটাল অক্ষরে, এই ফোন এলো বুঝি? মেঘ মাটি বায়ু, কে ধরিবে হায়, শিরায় শিরায়৷ কেবল বই হাতে থাকে, উল্টে যাওয়া পাতাগুলি, অক্ষর মুদ্রিত এইখানে, স্নায়ু ভ্যানিটিব্যাগ পরবেশ৷ টুসুতে মেতেছে লোকজন দীর্ঘ সূর্যের ছায়া নদীগুলি ধরেছে ঘিরে, জাতি জনজাতি উপপদগুলি, হাস-পিঠা হাঁড়িয়া হাই, তোল,টেনে তোল হাইহিল নদী বালু থেকে৷ নদীগুলি, শিরায় শিরায় বয়ে যাওয়া নদীগুলি নকশা ভুলে, কিঞ্চিত দ্বিধাগ্রস্ত ও ব্যাসদেব কমন্ডুলু ফেলে চলে এসেছেন রেল কম্পার্টমেন্টে, ফেল ঝতভর ও ফেয়ারি টেল ...
সুতরাm আখ্যান আরম্ভ৷